জেরেমী করবীনের নির্বাচনঃ গাধা সারা জীবন চিনি বয়ে বেড়ায় কিন্তু খেয়ে দেখতে পারেনা চিনি মিষ্টি, টক, না জ্বাল!
প্রকাশিত হয়েছে : ৮:২৩:৩৫,অপরাহ্ন ১৯ ডিসেম্বর ২০১৯ | সংবাদটি ১০৭২৪৮ বার পঠিত
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
(এক) বহুল আলোচিত সমালোচিত বৃটেনের নির্বাচন শেষ হয়েছে। নির্বাচনের আগে পরে যা ঘটেছে তা সবারই কম বেশী জানা হয়ে গেছে। আমি আর নির্বাচন নিয়ে চুল ছেড়া বিশ্লেষনে যাব না। কারন বিশ্লেষন করার মত যোগ্যতা আমার নেই। তবে এবারের নির্বাচনের আগেই আমাকে সাবধান করে দেয়া হয়েছিল নির্বাচন নিয়ে যেন উল্টো সিধে কোনো কিছু না লিখি, অথবা কোনো কিছু না বলি। সাবধান করে দিয়েছিল আমার স্ত্রী। কারন সে ছিল লন্ডন হিথ্রো বিমান বন্দরের পাশে ”হারো ওয়েষ্ট” নির্বাচনী এলাকার কনজারভেটিব দলীয় এমপি প্রার্থী। কারন আমার মুখে নাকি কোনো কিছুই আঠকায়না। লেখক সাংবাদিক হলে যা হয়। সত্য কথা বলার মত সাহস শুধু লেখক সাংবাদিকদেরই থাকে। তবে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা আমার কম নয়। নির্বাচনের সময় হারো ওয়েস্টে দুই এমপি প্রার্থীর ডিভেইট অথবা হাস্টিংসে মুসলিম কাউন্সিল অব গ্রেট বৃটেনের এক কর্মকর্তার পক্ষপাত মুলক উপস্থাপনার আমি ছিলাম নীরব সাক্ষী। তার উপস্থাপনা শুনে আমি উঠে দাড়ানোর চেষ্টা করেছি কিন্তু স্ত্রীর সাবধান করে দেওয়ার কথা চিন্তা করে নিজ থেকেই বসে পড়েছিলাম। আমি সবিনয়ে অনুরোধ করবো মুসলিম কাউন্সিল অব গ্রেট বৃটেনের নেতৃবৃন্দকে সেদিনের হাস্টিংসের রেকর্ডকৃত ফুটেজ দেখার জন্য। ভবিষ্যতে যদি কোনো কিছু লিখতে হয় মুসলিম কাউন্সিল অব গ্রেট বৃটেনকে নিয়ে তাহলে লিখব। নতুবা লিখবনা, কারন থু থু উপর দিয়ে নিক্ষেপ করলে সেটি নিজের উপরই পড়ে।
(দুই) আমি জেরেমি করবিন সাহেবের কাছে প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কারন ক্ষমাই মহত্বের লক্ষন। নির্বাচনে লেবার পার্টির ভরাডুবির পিছনে তার অবদান স্বীকার করতইে হবে। যারা রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ছাত্র অথবা ছিলেন তারা ভালো বলতে পারবেন রাষ্ট বিজ্ঞানে পৃথিবীর তিনটি দেশের রাজনীতি সাধারণত অনুসরন করা হয় । আমেরিকান পলিটিক্স, রাশিয়ান পলিটিক্স এবং বৃটিশ পলিটিক্স। গত সাড়ে তিন বছরে বৃটিশ রাজনীতিতে কি হয়েছিল? তা সবারই জানা। ২০১৬ সালে রেফারেন্ডোমের পর থেকে বৃটিশ রাজনীতি থমকে দাড়িয়েছিল। ইউরোপ থেকে বের হয়ে আসার জন্য বৃটিশ পাবলিক গণভোটের মাধ্যমে তাদের মতামত জানিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু জনগনের মতামতকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর এমপিরা হাউস অব পার্লামেন্টে ব্রেক্সিট বিল আঠকে রেখে তামশা করেছিলেন। বৃটিশ জনগন সেটিকে ভালোভাবে গ্রহন করেনি। ব্রেক্সিট নিয়ে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যমরুনের বিদায়, তারপর থেরেসা মে, এবং সর্বশেষ বরিস জনসন আসার পরও যখন কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারছিলনা তখন বাধ্য হয়েই বরিস জনসন আগাম নির্বাচন ডেকেছিলেন। প্রথমে নির্বাচনে লেবার পার্টি জেরেমি করবিন রাজী হননি। পরবর্তীতে লেবার, লিবডেম আর এসএনপি স্কটিশ ন্যশনালিষ্ট পার্টি মিলে সিদ্ধান্ত হয় যে তারা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেন। তাদের ধারণা ছিল তিন দল মিলে নির্বাচন করলে টোরি পার্টি অথবা বরিস জনসনকে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলবেন। যেই কথা সেই কাজ, নিরর্বাচন ডাকা হলো, ৬ সপ্তাহ সময় বেধে দেয়া হলো। ৬ সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন করতেই হবে। প্রথমত সময় কম, তারপর শীতের সিজন। বৃটেনে এই সময়ে নির্বাচন সাধারণত হয়না। সম্ভবত একশত বছর আগে নাকি শীতকলে নির্বাচন হয়েছিল। সে যাক নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছিল সব অপিনিয়ন পুল আর বৃটিশ মিডিয়া বলতে শুরু করে দিল কনজারভেটিব পার্টির সাথে লেবারের পার্থক্য ছোট হয়ে আসছে, বলা হলো ন্যারো গ্যপ। আমার মত মানুষ ভয় পেয়ে গেল। তার মানে কি জেরেমি করবিন এর লেবার পার্টি যদি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন পায় তাহলে আবারো ঝুলন্ত পার্লামেন্ট, আবারও অনিশ্চয়তায় বৃটেনের রাজনীতি, আবারো অনিশ্চিয়তায় দেশের মানুষ। তাহলে কি সহসা কোনো মুক্তি নেই? আমার ভয় কাটেনা। টিভি খুললেই দেখি জেরেমি করবিন বিভিন্ন টিভি ডিভেইটে এগিয়ে আছেন, আজ বলছেন এনএইচএস ফ্রি করে দিবেন, কাল বলছেন টিউশিন ফি প্রি করে দিবেন, পরশু বলছেন ব্রিটিশ রেইল জাতীয়করন করে ফেলবেন, এক এলাহি কারবার। এত দেখছি আমরা মোগল আমলে ফিরে যাবো। যে আমলে সব কিছু ছিল সন্তা। এক বন্ধু আমাকে ফোন করে বললেন ভাবছিলাম কনজারভেটিবকে ভোট দিব কিন্তু জেরেমি করবিনের প্রতিশ্রুতি শুনে মন পরিবর্তন করে ফেলেছি। জেরেমিকে ভোট দিব। তিনিই আমাদের প্রধানমন্ত্রী হবেন। আমি শুধু শুনি মন্তব্য করিনা। কারন ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমি কোনো কিছুই মন্তব্য করতে পারিনা।
প্রিয় পাঠক আমি ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছিলাম বোবা। এখন আর বলতে আমার বাধা নেই। গত সাড়ে তিন বছর বৃটিশ রাজনীতিতে যা হয়েছে তা ছিল অপ্রত্যাশিত। নির্বাচনের সময় বৃটিশ রাজনৈতিক পান্ডিতরা বলতে শুরু করেছিলেন আরেকটি ঝুলন্ত পার্লমেন্টের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বৃটেন। আবারো শাশ্বরুদ্ধকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। অবশ্য আমি আমার স্ত্রীকে বলেছিলাম ল্যন্ডসলাইড ভিক্টোরি যেটাকে বাংলায় বলে ভুমিধস বিজয়। স্ত্রী বলেছিল তোমি তো দেখছি বৃটিশ অপিনিয়নপুল, বৃটিশ রাজনৈতিক পান্ডিতদের ও হার মানিয়ে ফেলবে। যা বলেছ আমাকে কাউকে আর বলোনা। লোকে মুখ চেপে হাসবে। আমি মাঝে মধ্যে মুখ চেপে হাসি, স্ত্রী আমাকে সেটিই রিটার্ন দিল। আমি ৯০ এর দশকে লন্ডনে এসেছিলাম। তখনও এ রকম ছিল, ইউরোপ প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত ছিল বৃটেন। সবেমাত্র থেচারিজম শেষ হয়েছে। জন মেজর প্রধান মন্ত্রী, কেউ শুনেনা কারো কথা। জন মেজর বিরক্ত হয়ে বলেছিলেন ”পুট আপ অর শার্ট আপ”। ডেভিড ক্যমরুন ক্ষমতায় অধিষ্টিত হওয়ার পর তিনি কারো কথা শুনেননি। ইউরোপ প্রশ্নে তিনি গণভোট দিলে পাবলীক ইউরোপ থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে ভোট দেয়। পদত্যাগ করেন ডেভিড ক্যমরুন। ক্ষমতায় আসেন থেরেসা মে, ব্রাসেলসের সাথে দেন দরবার করে তিনি পেরে উঠেননি। তার কথা কেউ শুনেনি। মহিলা ক্ষমতা ও ছাড়তে চাননি, অবশেষে তিনি ছাড়লেন তবে বড্ড বেশী দেরী হয়ে গেল। তিনিও আগাম নির্বাচন দিয়ে বসলেন কিন্তু মেজরিটি তিনি অর্জন করতে পারলেননা। ডিইউপির সাথে তিনি কোয়ালিশন করলেন।
কিন্তু ব্রেক্সিট প্রশ্নে কোনো সিদ্ধান্তেই তিনি উপনীত হতে পারলেননা। ভদ্রমহিলা যেমনিভাবে বৃটেনের ক্ষতি করেছিলেন ঠিক তেমনিভাবে তিনি কনজারভেটিব দলেরও ক্ষতি করেছিলেন। দল এবং দেশকে দেউলিয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছিলেন। এক লেবার এমপি আমাকে বলেছিলেন ব্রেক্সিট প্রশ্নে বৃটেন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কোনো দলকেই জনগন বিশ্বাস করতে পারছেনা। ব্রেক্সিট নিয়ে আমি এর আগেও একটি লিখা লিখেছিলাম সেখানে লিখেছিলাম ব্রেক্সিট এর ব্যাপারে সাবেক স্পীকার জন বারকো ও কম করেননি। তিনি সব কিছুকে পিছনে রেখে ব্রাসেলসে চলে গিয়েছিলেন কথা বলতে, অথচ তার কোনো রুলে পড়েনা ব্রাসেলসে যাওয়ার, এবং ব্রেক্সিট নিয়ে কথা বলার।
সে যাক। প্রিয় পাঠক নির্বাচনের সময় জেরেমি করবিনের প্রতিশ্রুতি মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল, মানুষের মনে এই প্রশ্ন প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছিল কিভাবে সব কিছু ফ্রি দিয়ে দিবেন করবিন? তা ছাড়া মানুষ এনএইচএস নিয়ে এতটাই শংকিত ছিল যে জেরেমি করবিনের এনএইচএস ডসিয়ার যে কাগজ তিনি বিভিন্ন বক্তৃৃতায় তুলে ধরেছিলেন আর বলতেন এনএইচএস বিক্রি করে দিবে যদি বরিস জনসন ক্ষমতায় যান। সবচাইতে ভয়ংকর ছিল নিমুনিয়ায় আক্রাস্ত একটি ছেলের হাসপাতালের ফ্লোরে শুয়ে থাকার ছবি সোসেল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এবং বরিস জনসন সেই ছবিটি না দেখে সাংবাদিকের মোবাইলটি পকেটে ঢুকিয়ে দেয়া। পরবর্তীতে শুনেছিলাম নিউজটি নাকি সত্য ছিলনা। এত প্রপাগান্ডার পর ও বরিস জনসনের ল্যন্ডসলাইড ভিক্টোরী অথবা ভুমিধ্বস বিজয় আমাকে অবাক করেছে। বৃটিশ মিডিয়াগুলো বলছে মার্গাারেট থেচারের পর বরিস জনসনই একমাত্র নেতা যিনি এত গুলো সিট পেয়েছেন।
আরেকটি অভিযোগ ছিল বরিস জনসনের বিরুদ্ধে তিনি মুসলিম বিদ্ধেষী। আমার স্ত্রীর হাস্টিংসের সময় এক মহিলা আমাকে জিজ্ঞাস করেছিলেন তোমার স্ত্রী কনজারভেটিব পার্টি করে কি করে? বলেছিলাম আমি তো এখন তোমার সাথে কোনো কথা বলতে পারবোনা নিষেধ আছে। প্রগ্রামের পরে কথা বলো, উত্তর দিব। প্রগ্রামের পর মহিলা আসলেন আমার কাছে, জিজ্ঞাস করলেন, বলেছিলাম কনজারভেটিব আমার স্ত্রী করে, তোমি লেবার পার্টি করো তাতে তো আমি কোনো সমস্যা দেখিনা। তিনি বলেছিলেন না কনজারভেটিব পার্টিতে ইসলামাফোবিয়া রয়েছে। বরিস জনসন মুসলমান মহিলাদেরকে ব্যংক ডাকাতের সাথে তুলনা করেছেন, হিজাবকে লেটার বক্স বলেছেন। বলেছিলাম শুনেছি তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন, মহিলা বলেছিলেন ক্ষমা তিনি চাননি, তিনি তার ভুল বুঝতে পেরে যদি ক্ষমা চেয়ে নেন তাহলে তো ক্ষমা করে দেয়া উচিৎ। তারপর তাকে বলেছিলাম তুমি লেবার পার্টি করো কি করে? যে টনি ব্লেয়ায় ইরাকে লক্ষ লক্ষ নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করলো, সাদ্দাম হোসেনকে ঈদের দিনে ফাসি কাষ্টে ঝুলিয়ে হত্যা করলো, যে লেবার প্রধানমন্ত্রী সাইন্টিষ্ট ডেভিড কেলীকে সয্য করতে পারলোনা যে ডেভিড কেলী বলেছিলেন ”দেয়ার ইজ নো ওপেন অব মাষ্ট ডিস্টাকসন” তারপরের দিনই তার লাশ পাওয়া গিয়েছিল বাড়ীর পাশে , বৃটিশ সাংবাদিক টনি ব্লেয়ারকে জিজ্ঞাস করেছিল হেভ ইউ গট ব্লাড অন ইয়োর হ্যন্ড প্রাইম মিনিষ্টার? টনি ব্লেয়ার উত্তর না দিয়ে ফেল ফেল করে যখন থাকিয়েছিলেন তখন তার স্ত্রী সেরি ব্লেয়ার গান গেয়ে গেয়ে টনি ব্লেয়ার সাহেবকে নিয়ে গিয়েছিলেন, এসব কি তোমার মনে পড়েনা? মহিলা নিরুত্তর। আমি বলেছিলাম আষাড় মাসের গল্প শীতকালে আমার কাছে দিওনা। এক বরিস জনসন পত্রিকায় লিখেছে লেটার বক্স এবং ব্যংক ডাকাত। অবশ্যই তিনি বলতে পারেননা অথবা লিখতে পারেননা। যেহেতু তিনি রাজনীতি করেন। তোমাদের টনি ব্লেয়ারের তুলনায় তো বরিস জনসনের অপরাধ কম আমার দৃষ্টিতে। মহিলা ধীর গতিতে হেটে চলে যান। একটি কথা মনে রাখতে হবে মুসলিমদের প্রতি অন্য ধর্মের লোকদের ঘৃনা এবং মুসলমানদেরও অন্য ধর্মের লোকদের ঘৃনার বিষয়টির জন্য দায়ী ইরাক যুদ্ধ। টনি ব্লেয়ার আর বুশ মিলে যদি ইরাক যুদ্ধ না করতো তাহলে আজকে এই অবস্থার সৃষ্টি হতো না, অথচ টনি ব্লেয়ার সাহেব ইরাক যুদ্ধের জন্য কোনো ক্ষমা প্রার্থনা করেননি।
প্রিয় পাঠক লেখা লম্বা করে লাভ নেই। লেবার নেতা করবিন সাহেব ব্যাক্তিগতভাবে খুবই ভালো মানুষ অনেকেই সেটি বলেছেন। কিন্তু ভালো মানুষ হলে কি হবে? লেবার পার্টি গত সেঞ্চুরীর বেশীর ভাগ সময়ই ক্ষমতায় যেতে পারেনি। টনি ব্লেয়ার সাহেব ১৯৯৭ ইংরেজীতে ক্ষমতায় এসেছিলেন ল্যন্ডসলাইড ভিক্টোরী করে। তখন কনজারভেটিব পার্টিরও নানা ধরণের অপকর্ম প্রকাশিত হয়েছিল। মানুষ তীব্রভাবে ঘৃনা প্রকাশ করেছিল কনজারভেটিব দলের প্রতি। টনি ব্লেয়ায় একটানা ১০/১২ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। তিনি লেবার পার্টির গঠনতন্ত্র ক্লোজ ফোর তুলে দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন, সেই ক্লোজ ফোর আবার জেরেমি করবিন সংশোধন করেছিলেন গত সেপ্টেম্বর মাসে। জেরেমি করবিন সোসেলিজম প্রতিষ্টা করতে চেয়েছিলেন কিন্তু হয়নি। সোসেলিজমের স্বপ্নে করবিন ছিলেন বিভোর। বৃটেনের মানুষ লেবার পাটিকে কি বিশ্বাস করতে পারেনা? টনি ব্লেয়ারের পর ক্ষমতায় এসেছিলেন গর্ডন ব্রাউন। গর্ডন ব্রাউন যখন ক্ষমতা থেকে বিদায় নেন তখন তার চিপ সেক্রেটারী টু দ্য ট্রেজারী মিঃ লিয়াম বার্ন লিখে গিয়েছিলেন আই এম এফ্রেইড ” দেয়ার ইজ নো মানি, তৎকালীন সময়ে চ্যান্সেলর ছিলেন এল্যাস্টার ডার্লিং । এসব লিখতে চাইনা , ইতিহাস ঠেনে লাভ নেই। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে পিছনকে ঠেনে লাভ কি? দেশ ব্রেক্সিটের কাছে আঠকে থাকতে পারেনা। ইউরোপের ব্যপারে নির্বাচনের সময় জেরেমি করবিন তার অবস্থান পরিস্কার করতে পারেননি। তিনি বলেছিলেন নির্বাচনে জয়লাভের পর ৬ মাস পরে আরেকটি গণভোটের ব্যবস্থা করবেন। আরেকটি গণভোট কেন হবে? জেরেমি মানুষের পালস বুঝেননি। বৃটিশ পাবলীক কি চায় তা তিনি বুঝতে অক্ষম ছিলেন। আমরা চাই দেশ এগিয়ে যাক, সব মতভেদ ভুলে গিয়ে বৃটেন এগিয়ে যাবে। এনএইচএস নিয়ে কোনো রাজনীতি চলবেনা। মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটানোর রাজনীতি যারা করবেন তারাই ঠিকে থাকতে পারবেন। তবে শেষ কথা হচ্ছে জন মেজর যখন ক্ষমতা থেকে বিদায় নিয়েছিলেন তখন কনজারভেটিব পার্টিকে কঠিন মুল্য দিতে হয়েছিল, একের পর এক লিডার পরিবর্তন করতে হয়েছিল। আমার যতটুকু মনে পড়ে উইলিয়াম হেগ, ইয়ান ডানকান স্মীথ, মাইকেল হ্ওায়ার্ড এর পর ১০/১২ বছর পরে ডেভিড ক্যমরুন এসে দলকে আবার ক্ষমতায় নিয়ে এসেছিলেন। লেবার পার্টিরও কি সমান অবস্থা হবে? কে জানে। টনি ব্লেয়ারের পরে গর্ডন ব্রাউন, তারপর এসেছিলেন এড মিলিবান্ড, তারপরপরই সম্ভবত জেরেমি করবিন লেবার পার্টির লিডার নির্বাচিত হয়েছিলেন। সোসালিজমে বিশ্বাসী জেরেমী করবীন লেবার পার্টির যে ক্ষতি এবারের নির্বাচনে তিনি করেছেন শুধু লেবার পার্টির নয় দেশের যে ক্ষতি করেছেন তা কাঠিয়ে উঠতে লেবার পার্টিকে হয়তো আগামী দুই থেকে তিন টার্ম ক্ষমতার বাইরে থাকতে হতে পারে। জেরেমির সোসালিজম এর রাজনীতি আর গাধার চিনি বয়ে বেড়ানোর মধ্যে কি কোনো পার্থক্য আছে? গাধা সারা জীবন চিনি বয়ে বেড়ায় কিন্তু খেয়ে দেখতে পারেনা সেটি মিষ্টি না টক না জ্বাল। ঠিক তেমনি ভাবে সারা জীবনের সোসালিজমে বিশ্বাসী জেরেমি চেয়েছিলেন তার স্বপ্ন ছিল সমাজতন্ত্র প্রতিষ্টা করে তিনি ডাউনিংষ্টী্েরট প্রবেশ করবেন কিন্তু তা আর হলোনা, জেরেমির স্বপ্ন গাধার চিনি বয়ে বেড়ানোর মতই অপূর্ন থেকে গেল। আমার দুঃখটা সেখানেই। ভালো থাকুন কমরেড জেরেমী করবিন। আপনাকে লাল সালাম।
লেখক সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম
সাবেক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ
লন্ডন ১৭/১২/২০১৯ ইংরেজী