এভাবে আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্যরা মারা গেলে আটকাবেন কি করে? আজ্রাইল তো ঘুষ খায় না!
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০৬:২৯,অপরাহ্ন ৩১ জানুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ১২৭০৮১ বার পঠিত
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
আমার লেখার একজন পাঠক ও ভক্ত তিনি। পূর্ব লন্ডনে বসবাস করেন। রাজনীতি সচেতন, বাংলাদেশের রাজনীতির বিশেষজ্ঞ বলা যায় তাকে। প্রায়ই তিনি বাংলাদেশে ভ্রমনে যান, অতএব নাম উল্লেখ করা যাবেনা। আমার সাথে মাঝে মধ্যে দেখা সাক্ষাত হয়। নতুবা ফোনেই কথা হয় বেশী। উনার ফোন সব সময় আমি ধরিনা। কারন উনি কথা বলা শুরু করলে আর শেষ হয়না। আমার একজন সবচাইতে প্রিয় মানুষ সারাক্ষন ফোনে ব্যস্ত থাকেন। আমি ফোন করলে বিজি থাকলে লাইন কেটে দিলে তিনি আবার রাগ করেন, বলেন লাইন কেটে দিলেন কেন? তিনি সার্বক্ষনিক দেশ জাতি নিয়ে ফোনে ব্যস্ত। আমি আবার ফোনে বেশী কথা বলতে পারিনা। কান গরম হয়ে যায়। আর ফোন তো বারো মাসী কিচ্ছা বলার জন্য না। ফোন হচ্ছে জরুরী কথা শেষ করে রেখে দেয়া।
সে যাক, আমার পাঠকের সাথে দেখা হওয়ায় তিনিই সংবাদটি দিলেন, বললেন গত ২/১ সপ্তাহের মধ্যে ৪/৫ জন সংসদ সদস্য মরে গেছেন, আমার ভক্ত বললেন এটা তো খুবই চিন্তার বিষয়। আমি বলেছিলাম হায়াৎ ফুরিয়ে গেলে তো কিছুই করার নেই। বললেন যারা মারা গেছে তাদের বয়স খুব একটা বেশী নয়। বলেছিলাম এখন আর বয়স লাগেনা। যুগ পাল্টেছে, ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা হার্ট এ্যাটাক. ডায়বেটিক্স, ক্যান্সার এর মত রোগে ভোগে। তিনি বললেন আসলে এই পার্লামেন্টে যারা সংসদ সদস্য হয়ে এসেছে ওরা তো কেউই সঠিক ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসেনি। ২০১৪ আর ২০১৯ এর নির্বাচন তো পুরোটাই ভুয়া! পুলিশ ছাত্রলীগ, আওয়ামীলীগ, ক্যাডার, আর কিছু গরু ছাগলের উপস্থিতিতে ভোট গ্রহন সম্পন্ন হয়েছিল। আমি একটু চিন্তায় পড়ে যাই, আমার ঐ পাঠক বলেন দেখুন অস্ট্রেলিয়ায় আগুনের লেলিহান শিখায় দগ্ধিভুত হচ্ছে পুরো দেশ! এ যেন জন্ম থেকেই জ্বলছে । ইন্দ্রনেশীয়া সহ বিশ্বের বেশ কটি দেশে কয়েকদিন পরপর সুনামি সব কিছু লন্ড ভন্ড করে দেয়। সম্প্রতি দেখা দিয়েছে চীনে করোনা ভাইরাস। আমি বলেছিলাম পরিবেশের বিপর্যয়। তিনি বলেন আরে-না। আল্লার গজব। আপনি বলুন এই যে একটা সংসদ বাংলাদেশে, এই সংসদের সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা সংসদের ভিতরে দাড়িয়ে বলেন, এই অবৈধ সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে নতুন নির্বাচন দিন। যেখানে সংসদ সদস্য নিজেই বলছেন সংসদ অবৈধ, সেখানে আর কি কারো কিছু বলার আছে? আপনি যখন সংসদের মত পবিত্র জায়গায় দাড়িয়ে মিথ্যা কথা বলবেন তখন তো ধীরে ধীরে আল্লার গজব পড়া শুরু হবে। আমি বলেছিলাম আপনার কি ধারণা এই তিনশত সংসদ মরে গেলে সংসদ কলংক মুক্ত হবে? জাতি কলংক মুক্ত হবে? দেশ কলংক মুক্ত হবে? গনতন্ত্র এই সব বেঈমান এবং মিথ্যাবাদী সংসদ সদস্যদের হাত থেকে মুক্তি পাবে। ওরা মাঝে মধ্যে সংসদে দাড়িয়ে বলে আমরা জনগনের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাঝে মধ্যে বক্তৃতা করেন, বলেন আমাদেরকে জনগন ভোট দিয়ে সংসদে পাঠিয়েছে। আমি এ সব কথা শুনে হাসবো না কাদবো ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। এ সব কথা তো জাতীর সাথে প্রতারণার সামিল। একটা দুইটা সংসদ যদি বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসে তাহলে এক সময় মেনে নেয়া যায়। কিন্তু সবগুলো সংসদ সদস্য বিনা ভোটে বিনা প্রতিদন্ধিতায় পাশ করে সংসদে বসে দিব্যি কথা বলছে। সেদিন এক প্রতিমন্ত্রীর মুখে বঙ্গবন্ধুর বন্দনা শুনে মনে হয়েছিল টেলিভিশনটা লাত্তি মেরে ভেঙ্গে দেই। কিন্তু পরবর্তীতে ভাবলাম ভাঙ্গলে তো আমারই লস হবে।
একটা অবাক করা বিষয় প্রিয় পাঠক আপনারা লক্ষ করেছেন কি-না জানিনা। স্পীকার যখন বলেন আপনার সময় দশ মিনিট, তখন ৭ মিনিটই বঙ্গবন্ধুর ফিরিস্তি গাওয়া শুরু করে। বঙ্গবন্ধু থেকে বঙ্গ মাতা শেখ ফজিলুতুনেচ্ছা মুজিব, শেখ রাসেল, শেখ কামাল, শেখ জামাল, কেউই বাদ নেই। মুল বক্তেব্যে আসতে আসতে স্পীকার দেন মাইক বন্ধ করে। তবে যদি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কোনো বক্তৃতা হয় তাহলে স্পীকার মিনমিন্না শয়তানের মত বলেন আপনার সময় আরেকটু বাড়িয়ে দেয়া হলো আপনি ৩ মিনিটের মধ্যে শেষ করুন। ভক্ত বললেন আমেরিকায় দেখছেননা কয়েকদিন পর পর টর্নেডো হয়ে হাজার হাজার মানুষ মারা যায়, কেন মারা যায় বুঝেননা? এটা হচ্ছে আল্লার মার। প্রকৃতির প্রতিশোধ, প্রকৃতি বিগড়ে গেলে কারো কিছুই করার থাকেনা। আরেকটি ব্যাপার কি লক্ষ করেছেন? বলেছিলাম কি? বললেন দেশের বুকা নাঙা মানুষগুলো দিন দিন হাড্ডিসার হয়ে যাচ্ছে, ওদের মুখের দিকে থাকলে খুবই কষ্ট লাগে। অথচ সংসদ সদস্যগুলো একেকটা কেমন অস্ট্রেলিয়ান গাভির মত মোটা হচ্ছে। ভক্তকে বলেছিলাম আপনি সব কিছুই যেন আজ বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছেন। বললেন আপনাকে বলার উদ্দেশ্য হলো আপনি এগুলো লিখবেন, লোকে পড়বে। দেখলাম উনি বলেই যাচ্ছেন, যত সময় তার সাথে কথা বলবো তত সময়ই তিনি বলবেন, আর আমাকে শুনতে হবে। এক সময় বিদায় নিলাম. তাকে বললাম লিখবো, কিন্তু লিখে কি কোনো লাভ হয়? এসব লেখার কথা কেউ শুনেনা। কারন বর্তমান সরকারের চামড়া অনেক শক্ত। বর্তমান সরকারের পুলিশ, র্যব, বিজিপি, মেলেটারী, সবই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আঙ্গুলের ঈশারায় উঠে বসে। অবশ্য কারন আছে, ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই পিলখানা হত্যাকান্ড বর্তমান সরকারের একটি সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অংশ ছিল, যারাই বুদ্ধি দিয়েছে তারা কিন্তু কাজটি ভালো করেনি। এত গুলো সেনাবাহিনীর তাজা প্রাণ অকালে ঝড়ে গেল, পরবর্তীতে ঐ সব নিহত সেনাবাহিনীর স্ত্রীদেরকে বিভিন্ন দুতাবাসে ও হাইকমিশনে চাকুরী দিয়ে পুন:বাসিত করা হয়েছিল। আমি ইউরোপে বেশ কয়েকজন ঐ সব সেনাবাহিনীর স্ত্রীদের সাথে কথা বলেছিলাম তাদের স্বামী হারানোর যে বেদনা যে কষ্ট এটি বিশ্বাস করা কঠিন। একজন মহিলা এখনো আমাদের সমাজে সে যতবড় শিক্ষিত হউক -না কেন সে কিন্তু তার স্বামীর প্রতি ডিপেন্ডেন্ট। অবশ্য ব্যাতিক্রম কিছু আছে। স্বামী রেখে সারাক্ষন ফেইসবুক আর মোবাইলে পর পুরুষের সাথে কথা বলে। সেটি অন্য প্রসংঙ্গ। এই সেনাবাহিনীর সদস্যদেরকে হত্যা করে আওয়ামীলীগ সরকার তাদের ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করেছিল। যেমনিভাবে জিয়াউর রহমান সাহেব বেশ কিছু সামরিক অফিসারকে হত্য করে ক্ষমতার মসনদ কে পাকাপুক্ত করেছিলেন। যে কলংকের বুঝা নিয়ে জিয়াউর রহমান সাহেবের বিএনপি দিন কাটাচ্ছে একই কলংকের বুঝা মাথায় নিয়ে তো আওয়ামীলীগও দিন কাটাচ্ছে। এসব হত্যাকান্ড করে ক্ষমতায় বেশ কিছুদিন ঠিকে থাকা যায়, কিন্তু চুড়ান্ত পরিস্থিতির জন্য সদা সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কথায় কথায় তার বাবা মা পরিবারের হত্যাকান্ডের কথা বলে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে কান্নায় ভেঙে পড়েন, কিন্তু বিডিআরএর পিল খানার ঘটনায় যারা মৃত্যুবরন করলো তাদের ছেলে মেয়েদের তাদের পরিবারের সদস্যদের তো নীরবে কান্না আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। তারা তো বড় বড় সমাবেশে বক্তৃতা করে বলতে পারেনা কান্না জড়িত কন্ঠে বলতে পারেনা আমরা আমাদের বাবা হারিয়েছি। তারা তো প্রতিশোধও নিতে পারবেনা, যারা তাদের বাবা হত্যার জন্য দায়ী তাদের কি বিচার করতে পারবে? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন সেটি ৪০/৪৫ বছর পর হউক, বিচার তো হয়েছে! এখন বিডিআরের পিলখানা হত্যার বিচার কে করবে? বিডিআর এর পিলখানা হত্যার বিচার হতে হলে ক্ষমতার পরিবর্তন হতে হবে। তবে বিচার হয়, এবং হবে। পাপ বাপকে ছাড়েনা, আর খুন কোনোদিন চাপা থাকেনা। বঙ্গবন্ধু হত্যার খুনীরা বিভিন্ন দেশে পুরস্কৃত হয়ে চাকুরী পেয়েছিল কিন্তু শেষ রক্ষা তো হয়নি। হয়তো জাতিকে ৪০/৪৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে, পিলখানা হত্যার বিচারের জন্যও হয়তো ১৫/২০ বছর অপেক্ষা করতে হতে পারে।
প্রিয় পাঠক আপনারা হয়তো আমাকে ভুল বুঝতে পারেন, বলতে পারেন এ কেমন লেখা? কথাগুলো কিন্তু আমার নয়, কথাগুলো আমার এক পাঠকের। তবে যদিও কথাগুলো চরম বাস্তবতার আলোকে তিনি বলেছেন, কিন্তু ব্যপারটি আমাকে অনেক ভাবিয়েছে। আসলেও তো এই সংসদ এমন একটা সংসদ প্রত্যেকটি সদস্য ভোট চুরি করে এমপি হয়েছে। এমনও তো ঘটনা ঘটেছে একটি সেন্টারে ভোটার হচ্ছেন ১৫০০, পুলিশ, র্যব, আজিজ-বাহিনী সবাই মিলে ভোট দিয়েছে ১৫০০, আবার ছাত্রলীগ এসে মেরে দিয়েছে আরো ৫০০.. যা শালার, ভোট দিয়ে ধনী করে ফেলেছে আওয়ামীলীগকে। সিটও এমনভাবে পেয়েছে ল্যন্ডস লাইড ভিক্টরী যেটাকে বলে ভুমিধ্বস বিজয়! এত জনপ্রিয় আওয়ামীলীগ? এখন এ সংসদে বিরোধী দলের মার্কা নিয়ে যিনি নির্বাচন করেছেন তিনিও আওয়ামীলীর্গে লোক। ঐ ভদ্রলোক সর্ম্পকে আমি আবার কিছু লিখতে চাইনা। ঐ ভদ্রলোকের নামও নিতে চাইনা। সেদিন ফেইসবুকে ভদ্রলোকের সংসদে এক বক্তৃতা শুনেছি তিনি বলেই ফেলেছিলেন যেভাবে নেত্রী তাকে ডাকসুর ভিপি বানিয়েছিলেন ঠিক তেমনি করে তাকে এবার এমপি হওয়ার জন্য তিনি সহযোগিতাও করেছেন। পাঠক এ পৃথিবীতে কি আপনারা শুনেছেন বিরোধীদলের কোনো এমপিকে প্রধানমন্ত্রী পাশ করানোর সব ব্যবস্থা করেন? আমি তো কোনোদিন শুনিনি। আমার পাঠক যেভাবে বলেছেন এই সংসদের সবগুলো সংসদ সদস্য যদি মরে যায় তাহলে এ সংসদ কলংকমুক্ত হবে। তবে কারো তো মৃত্যু কামনা করা যায়না। সবাইকে আল্লাহ তালাহ হায়াৎ দান করুন। কিন্তু যেভাবে শুরু হয়েছে সংসদ সদস্যদের মৃত্যু আমি তো ভয়েই আছি। তবে মিথ্যবাদী এমপি মন্ত্রীরা যত তাড়াতাড়ি এ দুনিয়া ছাড়বে তত তাড়াতড়ি সমাজ বাচবে, জাতি বাচবে, বাচবে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র। বর্তমানে বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ নামক সরকার এমন কোনো কুকাজ নেই যা করতে পারেনা। একমাত্র মৃত্যু ছাড়া। তবে আজ্রাইল যদি ঘুষ গ্রহন করতো আর আওয়ামলীগ যদি ঘুষ দিত তাহলে কিন্তু আজ্রাইল ধনী হয়ে যেত। অথবা আজ্রাইলের যদি ঘড়ির প্রতি শখ থাকতো, শেয়ার মার্কেটের প্রতি লোভ থাকতো, বাংলাদেশ ব্যংকের রিজার্ভের প্রতি লোভ থাকতো, হলমার্ক, ডেষ্টেনীর প্রতি লোভ থাকতো, ভুমির প্রতি লোভ থাকতো তাহলে কিন্তু আজ্রাইল বিলিয়নার হয়ে যেত। আজ্রাইলের সাথে কি একটা বুঝা পারা করা যায়না? সেনাবাহিনী প্রধান ব্রিগেডিয়ার আজিজ, র্যারের প্রধান বেনজীর আহমদ, পুলিশ বাহিনীর প্রধান জাভেদ পাটওয়ারী, বিজেপির প্রধান, মো: এস ইসলাম, দুদকের চেয়ারম্যান, ইকবাল মাহমুদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শামীম আফজাল, ডিবিসি টিভির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ৭১ টিভির মোজাম্মেল বাবু, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নঈম নিজাম, পীর হাবিব, বাংলা ইনসাইডারের সৈয়দ বোরহান কবীর এদের সমন্নয়ে আজ্রাইল প্রতিরোধ কমিটি করলে আমার মনে হয় ভালো হবে। যে হারে সংসদ সদস্যরা মারা যাচ্ছে তাতে আমি খুবই চিন্তিত। ২০৪০ পর্যন্ত কি আওয়ামলীগ ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে পারবে? তাদের ঠিকে থাকতে হলে আজ্রাইলকে প্রতিরোধ করা ছাড়া আর কোনো সোজা পথ আমি অন্তত দেখছিনা। বিষয়টি আওয়ামীলীগের নীতি নির্ধারকদের ভেবে দেখা দরকার।
লেখক সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম
সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ
সাবেক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব।
লন্ডন ২৯/০১/২০০০ ইংরেজী। মঙ্গলবার