সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত পরিবারের কাছে কি জিম্মি সিলেটের স্থানীয় আওয়ামীলীগ ????
প্রকাশিত হয়েছে : ৯:০১:৫২,অপরাহ্ন ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | সংবাদটি ১২৬০১১৩ বার পঠিত
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
(এক) লেখার টেবিলে বসে ভাবছি কিভাবে শুরু করবো? এক সময় লিখতে হতো কাগজে, আমার বাবা বলতেন কেন এই সময়, কাগজ, আর কালির, অপচয় করো? লিখে কি কিছু হয়, বাবার কথা আমার প্রায়ই মনে পড়ে, পরিবারের বাবা হচ্ছেন সবচাইতে বড় শক্তি। বাবা আমার নেই, ২০০৫ সালে এ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। বাবার শুন্যতা আমাকে এখনো তাড়িত করে, বাবার জন্য দোয়া করি হে আল্লাহ তুমি আমার বাবাকে শুধু আমার বাবা নয় পৃথিবীর সব বাবা মা কে বেহেস্তের সর্ব্বোচ্চ সম্মানীত স্থানে অধিষ্টিত করো। বাবার কথা ভাবছি এমনি সময় মোবাইল ফোনটি বেজে উঠে। অনিচ্ছা থাকার পরও ধরলাম, অপর প্রান্ত থেকে সালাম করেই কথা শুরু । ফয়সল ভাই একটা বিষয় জানার জন্য ফোন করেছি, বললাম বলুন। বললেন আচ্ছা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নাকি একটা কুকুরের বাচ্চা এডপ্ট করেছেন? বললাম এ খবর তো ৩/৪ মাস আগের, তিনি বললেন না আমি আজ শুনেছি। বললেন এটা কি সত্যি নাকি নতুন স্ত্রী অথবা গার্লফ্রেন্ডকে বাচ্চা না দিলে কুকুরের বাচ্চা নাকি উপহার দেয়া হয়, বললাম হ্যা বৃটিশ কালচারে এ রকম একটি অলিখিত নিয়ম চালু আছে বলে শুনেছি, আমি শিউর না। বললেন ঠিক আছে আপনাকে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত। বললাম ইঁটস অকে। ফোন রেখে দিলেন, কিন্তু তিনি কে কোথা থেকে ফোন করেছেন তা বললেন না। আমি লাইন কেটে ভাবছি মানুষ সব খবর রাখে। প্রিয় পাঠক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সাবেক স্ত্রী মেরিনার সাথে ২৫ বছরের ঘর সংসারের ইতি ঠেনেছেন গত বছর। শুনেছি তাদের চুড়ান্ত তালাকও হয়েছে। বরিস জনসনের ৪ সন্তান। এর মধ্যে নির্বাচনের সময় আরো ২টি লাভ চাইল্ডের খবর প্রকাশিত হয়েছিল। বরিস সেগুলোকে চেপে গেছেন। বর্তমান গার্লফ্রেন্ড অথবা পার্টনার যাই বলিনা কেন মিস ক্যারি সিমন বরিস জনসনের সাথে আছেন, শুনেছি বিয়ের জন্য নাকি ক্যারি চাপ দিচ্ছেন। হয়তো সহসাই বরিস নতুন বিয়ের পিড়িতে বসবেন। লন্ডনের বাঙালী কমিউনিটিতে একটি কথা চালু আছে লন্ডন প্রবাসী সিলেটিরা নাকি দেশে গিয়ে গরীবীর সুযোগ নিয়ে অল্প বয়স্ক মেয়ে বিয়ে করে বসেন। বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সাথে ক্যারির বয়সের পার্থক্য অনেক। বরিস ৫৫ ক্যারি সিমন বোধহয় ৩০/৩১ এর কাছা কাছি।
(দুই) সে যাক, বরিস ক্যারির সম্পর্ক নিয়ে আরেক দিন লিখবো। আজ লিখতে বসেছি সিলেটের আওয়ামীলীগ নিয়ে। যেহেতু বাড়ী সিলেটে সেহেতু লন্ডনে বসবাস করলেও সিলেটের রাজনীতি কোনদিকে যাচ্ছে তার একটু আধটু খবরা-খবর রাখার চেষ্টা করি। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে সিলেটের আওয়ামী রাজনীতি নিয়ন্ত্রন করছেন সাবেক অর্থমন্ত্রী জনাব মুহিত সাহেব ও তার পরিবার, তাদের কথায় সিলেটে আওয়ামীলীগ উঠে বসে, এ যেন কান ধরে উঠা বসার মতই, কারো কোনো কথা সেখানে চলেনা। তিনিই এবং তার পরিবারই স্বর্গে সর্বা। একে তো অর্থমন্ত্রী ছিলেন তার উপর বয়সের দিক থেকে তিনি প্রবীন। তিনি যেমনি নাচান তেমনি নাচে সিলেট আওয়ামীলীগ। ঐ যে একটা গান আছেনা যেমনি নাচাও তেমনি নাচি পুতুলের কি দোষ……..। যারা সারা জীবন আওয়ামীলীগ করেছে যাদের রক্ত-ঘামে সিলেটে আওয়ামীলীগ আজ প্রতিষ্টিত, সে সব নেতাদের কোনো দাম নাকি নেই অশতীপর সাবেক এই মন্ত্রীর কাছে। মন্ত্রীর সাথে আমার পরিচয় হয়েছিল একবার লন্ডনে, সেটি ছিল ১৯৯২/৯৩ সাল। তিনি লন্ডনে এসেছিলেন, আমরা তখন পূর্ব লন্ডনের ডেভেনান্ট সেন্টারে “দেশ বিকাশ” নামক একটি সংগঠনের উদ্যেগে বাংলাদেশ মেলার আয়োজন করেছিলাম, সে বছর ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের মহিউদ্দিন সাহেব বই নিয়ে ঢাকা থেকে এসেছিলেন, মেলায় ষ্টল দিয়েছিলেন। মরহুম তাসাদ্দুক আহমদ সাহেব আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন মুহিত সাহেবকে। মুহিত সাহেব তখন সম্ভবত জেনেভায় কি যেন চাকুরী করতেন। আজকের যারা লন্ডনে অথবা বাংলাদেশে তাদের অনেকেই হয়তো তাসাদ্দুক সাহেবকে চিনবেননা, একুশে গানের রচিয়তা আব্দুল গাফফার চৌধুরী সাহেব একবার ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাব সর্ম্পকে তাসাদ্দুক ভাইকে কি যেন জিজ্ঞাস করেছিলেন তখন গাফফার ভাইর কাছ থেকে শুনেছিলাম তাসাদ্দুক ভাই ঢাকা জাতীয় প্রেস ক্লাব গঠনের সময় ভুমিকা রেখেছিলেন। তাসাদ্দুক ভাইয়ের দেশের বাড়ী সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। তাসাদ্দুক আহমদ সাহেবকে তৎকালীন আইয়ুব খানের সরকার অবিভক্ত পাকিস্তান থেকে বের করে দিয়েছিল, তিনি তখন বাম রাজনীতি করতেন। তাসাদ্দুক আহমদ সাহেবের ভাই এরশাদ সাহেবের শাসনামলে শিক্ষা সচিব ছিলেন নাম ছিল সম্ভবত হেদায়ত আহমদ। তাসাদ্দুক ভাই পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেছিলেন মুহিত সাহেবের বাবার সাথে তিনি রাজনীতি করেছেন। তাদের পুরো পরিবার উচ্চশিক্ষিত, তবে——-ধরা আছে। আমি অবশ্য কিছুটা চিনতাম, মুহিত সাহেব তো এরশাদ সরকারের অর্থ উপদেষ্টা অথবা অর্থমন্ত্রী ছিলেন এক সময়। তা ছাড়া তাদের বাসা ছিল সিলেট শহরের সুবানিঘাটে। আমার একটিা ছাপাখানা ছিল, নাম ছিল উদয়ন প্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স, সেটিও ছিল সুবানিঘাটে। আজকের যিনি পররাষ্টমন্ত্রী তৎকালীন সময়ে তিনিও বোধহয় ঐ সময়ে সিলেটে আসতেন। তাদের বাসা এবং আশ পাশের বাসা থেকে সকালে দুএকজন মহিলা কুকুর নিয়ে হাটতে বের হতেন। ৮০ দশকের শেষের দিকে বাংলাদেশে যারা একটু উপর তলার লোক ছিলেন তাদের স্ত্রী মেয়েরা সকালে বের হতেন কুকুর নিয়ে। এটা এক ধরনের ওয়েষ্টার্ন ষ্টাইল ছিল। জানিনা এখনো সেই ষ্টাইল সিলেটে অথবা ঢাকায় আছে কি-না? এই কুকুর পোষার ষ্টাইল দেখা আমাকে ছাড়লোনা, ৯০ দশকের প্রথম দিকে আমি যখন লন্ডনে আসি এখানে এসেও কুকুর পোষা আমার দেখতে হয়। কুকুর খুবই প্রভু ভক্ত। কিন্তু আমার কেন জানি কুকুর দেখলে ভয় হয়। বেশ আগের কথা লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে কুকুর দিয়ে প্রত্যেক যাত্রীর দেহ তল্লাশী করা হচ্ছিল, আমার যেহেতু কুকুর ভীতি আমি বলেছিলাম প্লিজ আমাকে কুকুর দিয়ে চেক করনা, মহিলা বলেছিল এটা তো আমার জব, আমি বলেছিলাম পৃথিবীতে এত জব থাকতে তুমি এই কুত্তা, বিড়ালের জব বেচে নিলে কেন? মহিলা একটি মুচকি হেসে দিয়ে বলেছিল তাহলে আমি কি করবো? বলেছিলাম অন্য জব দেখে নাও। পৃথিবীতে তো আরো অনেক জব আছে। মহিলা নাচোর বান্দা সে আমার বডি তল্লাশী করবেই, আমি বলেছিলাম দাড়াও, আমি আমার সব কাপড় খোলে দেখাই তোমাকে, তুমি যদি বলো টাউজারের নীচেরটাও খুলে দিব তারপরও প্লিজ কুকুরকে দিয়ে আমার বডি চেক করোনা……, মহিলা হাসতে হাসতে আমাকে চেক না করে অন্যজনের কাছে চলে গিয়েছিলো।
(তিন) সে যাক আসলে কথার পীঠে কথা চলে আসে। অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেবের কথায় আসি, সম্ভবত মাস তিনেক আগের কথা। কি একটি মিটিংএ সিলেটের সাবেক মহিলা এমপি সৈয়দা জেবুন্নেছা হককে এক রকম অপমান করেছিলেন সাবেক এই মন্ত্রী। জেবুন্নেছা হক কিছুই বলতে পারেননি, জেবুন্নেছা হক সেই নু-আলাই সাল্লামের কাল থেকে আওয়ামীলীগ করে আসছেন, যে সময়ে আরবের লোকেরা খেজুর খেয়ে জীবন ধারন করতো। যে আমলে মুহিত সাহেবরা আওয়ামীলীগের ধারে কাছেও ছিলেননা। সেই জেবুন্নেছা হককে অপমান করার পর একজন আওয়ামীলীগ নেতাও সেদিন প্রতিবাদ করেননি। শুনেছি ওরা ভয় পায়, কারন সিলেটে যারা আওয়ামীলীগ করে তাদের হাভভাব দেখলে মনে হয় তারা মুহিত পরিবারের প্রজা। আমি গত ২০১৭ সালে সিলেটে গিয়েছিলাম দৈনিক শুভ প্রতিদিনের প্রকাশনা উৎসবে, সেখানে সাংবাদিকদের ধমক দিয়েছিলেন মুহিত সাহেব। আমার কিছুটা রাগ হয়েছিল, আমার পাশে ছিলেন সিলেটের আওয়ামীলীগের এক নেতা তাকে বলেছিলাম এসব কি করেন উনি, তিনি বলেছিলেন আপনি দেখেননা উনি তো ঢাকার সাংবাদিকদেরকেও ধমক দেন রাবিশ টাবিশ বলেন, তিনি বললেন আপনি বেশী কথা বলবেননা। এটা লন্ডন না, সিলেট। আমি মুহিত সাহেবের এই মাস্তানী দেখে ভয় পেয়ে আমি যে বক্তৃতা দিতে চেয়েছিলাম সেটি নিজ থেকেই এডিট করে বক্তৃতা করেছিলাম, কারন কি থেকে কি বলবো ভদ্রলোক যদি বলে উঠেন রাবিশ, তাহলে তো ইজ্জত নিয়ে ঠান পড়বে। আমি আবার অন্যায় দেখলে সহ্য করতে পারিনা। একবার আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মরহুম জলিল সাহেব লন্ডনে এক সাংবাদিককে ধমক দিয়েছিলেন, আমি জিজ্ঞাস করেছিলাম ধমকান কেন? জলিল সাহেব উল্টো আমাকে ধমক দিয়ে বসলেন। আমি বলেছিলাম আপনি আমাকে ধমকাবেননা। কারন আমি আপনার খাইও-না-পড়িওনা। বাংলাদেশে ক্ষমতা পেলে অনেকেই দাপট দেখান, সাবেক এই অর্থমন্ত্রী মহোদয়ও কম করেননি। বাংলাদেশে বিশেষ করে আমার দেখা সাবেক এই মন্ত্রীর দাপট এতটাই ছিল যে তিনি ধরাকে সরাজ্ঞান মনে করেন। একবার সাংবাদিকদের বেতন নিয়ে তিনি যে ভাষায় কথা বলেছিলেন আমি মনে মনে বলেছিলাম মুহিত সাহেবের ভাগ্য ভাল আমি হলে তো প্রতিবাদ করতাম। আমি মুহিত সাহেবের ব্যপারে একটু খোজ খবর নেয়ার জন্য আমার এক বন্ধুকে ফোন করেছিলাম, বন্ধু আমাকে যা বললো তার সারমর্ম হলো মুহিত সাহেব বিশিষ্ট অর্থনীতিবীদ, একই সাথে তিনি কুঠনৈতিকও । তার জ্ঞান গরিমা অনেকের থেকে বেশী। তিনি হাভার্ডে ১৯৬৪ ইংরেজীতে এবং অক্সফোর্ডে ১৯৫৭/৫৮ এ পড়াশুনা করেছেন। তিনি ৩৫ টা বই ও নাকি লিখেছেন, বিভিন্ন বিষয়ে। এত পড়াশুনা জানা একজন মানুষ এ রকম ব্যবহার করেন কি করে? আচ্ছা এই যে অর্থমন্ত্রী মহোদয় অথবা পররাষ্টমন্ত্রী মহোদয় উনাদের এচিভমেন্ট কি? বাংলাদেশে অর্থমন্ত্রীরা ভ্যাট বসিয়েছেন? ভ্যাট তো লন্ডন থেকে হায়ার করে নিয়ে বসিয়ে দিয়েছেন। কিছুদিন আগে বাংলাদেশে ট্রাফিক আইন হয়েছে। পুরো ট্রাফিক আইন লন্ডনের ট্রাফিক আইন কপি করে বাংলাদেশে বসিয়ে দিয়েছে। আমি ডঃ কামাল হোসেন স্যার কে জিজ্ঞাস করেছিলাম বাংলাদেশের ফরেন পলিসি কি? আপনি লিখেছেন কোনো পলিসি, তিনি উত্তর দিয়েছিলেন সময় পাইনি। বাংলাদেশের অর্থনীতি কি? কেউ যদি জিজ্ঞাস করে বলতে হবে অর্থনীতি হচ্ছে যে সরকারই ক্ষমতায় থাকবে সেই দলের এমপি মন্ত্রীরা ব্যংক লুটপাট করা। শেয়ার বাজার কি? বলতে হবে লুটপাটের কারখানা। মুহিত সাহেবই তো সংসদে দাড়িয়ে বলেছিলেন দেশে পুকুর চুরি নয় সাগর চুরি হচ্ছে, অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনি কি কিছু করতে পেরেছিলেন? কোনো যুগান্তকারী কিছু? তার কি কোনো নতুন ইকনমিক পলিসির কারনে দেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে? হয়নি। আমি অর্থনীতি নিয়ে এখানে জ্ঞান গর্ব আর ইন্টারনেট থেকে গুগল থেকে সার্চ করে কিছু লিখতে চাইনা। আমি অনেকের বই পড়েছি, অমরর্ত্য সেনের বই ও পড়েছি তার ইকনমিক থিওয়রী পড়েছি, আমি জানিনা আমি ভুলও হতে পারি, আমার কাছে মনে হয়েছে অরমর্ত্য সেনের ইমাজিনেশন থিওয়রী দিয়ে গাদা গাদা বই লিখা যায় এ পৃথিবী চলেনা। দুতিন বছর আগে আবুল বারাকাত নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপকের বই ” বঙ্গবন্ধু-সমতা-সাম্রাজ্যবাদ” বঙ্গবন্ধু বেচে থাকলে কোথায় পৌছতো বাংলাদেশ”, কয়েক পৃষ্টা পড়ে যিনি বইটি আমাকে উপহার দিয়েছিলেন তাকে ফেরৎ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পারিনি, কোনো মন্তব্য করতে চাইনা। বইটির কিছু অংশ পড়ে মনে হয়েছে, বারাকাত সাহেব এটি বই লিখেছেন নাকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চামচামী করেছেন? আল্লাহ তোমি এ জাতীয় চামচাদেরকে ক্ষমা করো!!!
(চার) প্রিয় পাঠক আমি এ জীবনে বই কিনে আর বই পড়ে যে টাকা অপচয় করেছি এখন আর তা করিনা। ৮০ দশক থেকে ৯০ দশক বাংলা একাডেমির বই মেলা মিস হয়নি আমার, পুরো বছর টাকা জমিয়ে বই কিনতাম, পড়তাম, পড়ে বাসায় সাজিয়ে রাখতাম, লন্ডনে আসার সময সব গুলো বই নিয়ে এসেছিলাম, বয়স বাড়ার পর ঐ সব বই পড়ে মনে হয়েছে, কেন যে সময় নষ্ট করলাম কেন যে টাকার অপচয় করলাম, একদিন রাগ করে সব বই ডাষ্টবিনে ফেলে দিয়েছি। মুহিত সাহেবের ভাষায় বলতে ইচ্ছে করছিল রাবীশ। এই যে বাংলা একাডেমীর বই মেলায় বই বিক্রি হয় আমি বলবো দেখে শুনে বই কিনতে, অনেক লেখক আছে যাদের বই ডাষ্টবিনে ফেলে দেয়ার উপযুক্ত। কবি কতগুলো আছে সারাক্ষন প্রেমের কবিতা লিখে. তার কবিতা কে পড়ে। যন্ত্রনা যাকে বলে। এই ফেব্রুয়ারী মাস এলেই কিছু নতুন কবি লেখকদের যন্ত্রনা আর উৎপাত বেড়ে যায়।
(পাঁচ) সে যাক, বলছিলাম অর্থনীতি কি? আমার কাছে যা মনে হয় অর্থ হচ্ছে বাস্তবতা, নীতি হচ্ছে আধ্যাত্মিকতায়। একটি দেশের মানুষদের হাত যত শক্ত তার অর্থনীতি ততটাই মজবুত। অর্থনীতির সাথে হাতের একটি মিল রয়েছে। এখন আপনি যদি কাজ করেননা, কাম করেননা, এমনিতে নাই অর্থ, তার মধ্যে বিদেশে অর্থ পাচারে লিপ্ত থাকেন, বাংলাদেশ ব্যংকের রিজার্ভ চুরি করেন, সার্বক্ষনিক দুর্নিতীর সাথে লিপ্ত থাকেন, কি সরকারী কি বেসরকারী তাহলে অর্থনীতি এগুবে কি করে? বাংলাদেশে যদি শিল্পের বিকাশ না ঘটে, অর্থনীতির যদি অবকাঠামো তৈরী না হয় সেখানে অর্থনৈতিক মুক্তির কথা চিন্তা করবেন কি করে? প্রথমে শিল্পের বিকাশ করতে হবে, পুজির বিকাশ করতে হবে, উৎপাদন পদ্বতিতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে হবে, এসব পরিবর্তনের পরেই কেবল বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়া সম্ভব। তা ছাড়া কৃষক শ্রমিক মেহনতী মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়াতে হবে, তাদের ক্রয় ক্ষমতা বাড়লে আভ্যন্তরীন বাজার সম্প্রসারিত হবে , আভ্যন্তরীন বাজার সম্প্রসারিত হলে শিল্পের বিকাশ ঘটবে, শিল্পের বিকাশ হলেই উৎপাদনটা সামাজিক হবে, উৎপাদনটা সামাজিক হলেই অর্থনীতির একটা অবকাঠামো তৈরী হবে। অর্থনীতির অবকাঠামো তৈরী না হওয়া পর্যন্ত কি সোনার বাংলা, কি সম্পদের সমবন্টন, কি সামাজিক ন্যায় বিচার কোনোটাই সম্ভব নয় সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত সাহেবের দেশে অথবা চাটার্ড একাউন্টেসী পাশ বর্তমান অর্থমন্ত্রী লোটাস কামাল সাহেবের দেশে। লোটাস কামাল সাহেব বেশ কয়েক মাস আগে লন্ডনে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের ইউরোপ সংস্করনের প্রকাশনা উৎসবে আমার বক্তৃতার উত্তর দিতে গিয়ে তিনি বলেছিলেন তিনি চাটার্ড একাউন্টেন্ট!!! আমি বলেছিলাম লোটাস কামাল সাহেবের মত মানুষ যদি মন্ত্রী হতে পারেন তাহলে আমরা যারা লন্ডনে বসবাস করছি আমাদের বাবা চাচারা যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় লন্ডন থেকে অবদান রেখেছিলেন তাদের ছেলে মেয়েদের মন্ত্রী এমপি হতে বাধা কোথায়? লোটাস কামাল বুঝাতে চেয়েছেন তিনি টম ডিকেন হ্যারি না। সিলেটি ভাষায় বুঝাতে চেয়েছেন আমি আব্দুল হাশিম না। আমার কাছে ভদ্রলোককে অর্থমন্ত্রীর মেটেরিয়েল মনে হয়না, তার চাইতে মুহিত সাহেব অনেক ভালো অর্থমন্ত্রী ছিলেন এটা স্বীকার করতেই হবে।
(ছয়) সে যাক, সিলেটের আওয়ামী রাজনীতির অবস্থা এখন টালমাটাল। যারা রক্ত ঘাম ঝরিয়েছে তাদের কোনো অবন্থান নেই। এবারের কমিটির দিকে তাকালে দেখতে পারবেন! বদর উদ্দিন কামরান সাহেবের অবস্থান কোথায়? ভদ্রলোককে বিগত মেয়র নির্বাচনে ফেইল করানো হয়েছে, বর্তমান মেয়র জনাব আরিফুল হক চৌধুরী মুহিত সাহেবের নিকটাত্মীয়, শফিকুর রহমান চৌধুরীর অবস্থান কোথায়? সাধারন সম্পাদক থেকে সভাপতি হওয়ার কথা কিন্তু তিনি নেই। বিশ্বনাথ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান সাহেব নাকি এবার সভাপতি প্রার্থী ছিলেন আমি লন্ডনে গিয়েছিলাম পার্শবর্তী দেশের—- এক অনুষ্টানে, আমাকে বেশ উচ্চপর্যায়ের লোকজন মুহিবুর রহমান সাহেব সম্পর্কে জানতে চেয়েছিলেন আমি যতটুকু বলার বলেছিলাম, সে অন্য প্রসংঙ্গ। ফয়জুল আলোয়ার সাহেবের অবস্থান নেই। এডভোকেট শাহ মশাহিদ আলী সাহেবের অবস্থান কি? উনি তো সেই বড় ভুমিকম্পের আগ থেকেই আওয়ামীলীগ করছেন! হতে পারেন তিনি বিশ্ব প্রেমিক…..। মরহুম ইফতেখার হোসেন শামীম সাহেবের স্ত্রীর অবন্থান নেই, জেবুন্নেছা হক এক সময় মহিলা এমপি ছিলেন এখন তো মুহিত সাহেব জেবুন্নেছার সাথে বাজে ব্যবহার করেন। আসাদ উদ্দিন সাহেবের ব্যপারটি না হয় মানা গেল একই পরিবারে দুই ভাইকে কোথায় জায়গা দিবেন? মিসবাহ উদ্দীন সিরাজ সাহেবের অবস্থান শুন্যের কোটায়। আশফাক সাহেব? উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে আর কোনো প্রমোশন হলোনা, বিজিত চৌধুরী সাহেবের অবস্থান নেই, সুজাত আলী রফিক আসছেন আসছেন বলে তিনি আর আসতে পারেননা। এটিএম হাসান জেবুল ৯০ এর দশকে সিলেটের রাজপথ কাপিয়ে বাড়ীতে বসে আছেন, ডাক্তার নাজরা চৌধুরী ইসমত চৌধুরী সাহেবের মেয়ে ২০১৭ ইংরেজীতে দেখা হয়েছিল আমার সাথে, কোনো পদ পদবী নেই, নাজিরা বেগম শীলা গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদ নিয়েই সন্তুষ্ট। নাজনীন আক্তার কনা যুব মহিলা লীগ নিয়েই বন্ধুর পথ পাড়ি দিচ্ছেন, অথচ আমি যাদের নাম উল্লেখ করেছি তারা কিন্তু হাইব্রিড নেতা নন। তারা সিলেটের রাজপথে বছরের পর বছর সময় টাকা পয়সা সব ব্যয় করেছেন কিন্তু দল তাদেরকে কি দিয়েছে? দলকে তো তারাই দিয়েছেন জীবন যৌবন সব। শেষ বয়সে এখন তারা অপমানিত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী দ্বারা এটাই কি নিয়তির নির্মম পরিহাস? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই বলেন আমার দুর্দিনের কর্মীদের কিছুই হয়নি। এটি কি শান্তনার বাণী? কে জানে। আমি জানিনা সাবেক অর্থমন্ত্রী মুহিত সাহেবের পরিবারের দাপট কতদিন চলবে সিলেটের স্থানীয় আওয়ামীলীগে? এভাবে দাপট চলতে থাকলে একদিন দেখা যাবে আওয়ামীলীগের হার্ডকোর তৃনমুলের নেতারা রাজনীতি ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে বাড়ীতে বসে বসে গান শুনছেন ” কাটে না সময় যখন আর কিছুতে বন্ধুর টেলিফোনে মন বসে না ———-।
লেখক সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম
সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ
সাবেক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
লন্ডন ১৯/০২/২০২০ ইংরেজী, বুধবার
rafcbanglastatement@yahoo.com