মাননীয় প্রধানমন্ত্রী- পাপিয়ারা জন্ম নেয় অপু উকিল, নাজমা, ঘড়ি কাদের, আসাদুজ্জামান কামাল, এবং অসৎ পুলিশ অফিসারের জন্য!
প্রকাশিত হয়েছে : ১:১৮:২৮,অপরাহ্ন ০৫ মার্চ ২০২০ | সংবাদটি ২৫৫৮৩৪ বার পঠিত
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
পাপিয়া কেলেঙ্কারি করোনা ভাইরাসকে হার মানিয়েছে। গোটা বিশ্ব যখন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, গোটা বিশ্বের অর্থনীতিবীদরা যখন অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে শংকিত বাংলাদেশ তখন অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছে পাপিয়া নামক এক মহিলাকে নিয়ে। অনেকেই পাপিয়াকে নষ্ট দুশ্চরিত্রের মহিলা বলে আখ্যা দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন পাপিয়া আওয়ামীলীগের মান সম্মান ইজ্জত সব নষ্ট করে ফেলেছে। আমি বলবো পাপিয়া দোষী নয়। পাপিয়াকে নরসিংদী থেকে কে নিয়ে এসেছে ? পাপিয়া তো নরসিংদীর মেয়ে, এক মফস্বলের মেয়ে এতটা বেপোরায়া হয় কার ইঙ্গিতে কার ঈশারায়? কারা তাকে নরসিংদী থেকে ঢাকা নিয়ে এসেছে? কারা তাকে এমপি মনোয়ন পাইয়ে দেওয়ার জন্য দশ কোটি টাকা নিয়েছে? সাধারন সম্পাদক পদের জন্য সে কোথায় চার কোটি টাকা খরচ করেছে? এসব তো আর রকেট সাইন্স নয়, এসব জানার জন্য কার কাছে প্রশ্ন করবো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? আপনরা কাছে? না ঘড়ি কাদের স্যারের কাছে? না আসাদুজ্জমান কামাল স্যারের কাছে? না অপু উকিল ম্যডামের কাছে? না নাজমা ম্যডামের কাছে? না র্যাবের বেনজীর স্যারের কাছে? না পাপিয়ার স্বামী সুমন চৌধুরীর কাছে? ঐ ভদ্রলোক তো বলেছেন পাপিয়াকে তিনি নিষেধ করেছেন হোটেলে রাত না কাটাতে, সে শুনেনি। স্ত্রী যখন কথা শুনেনা তখন তো রাস্তা খোলা দক্ষিনা দুয়ার খোলে দিতেন তিনি। আসলে তিনিও লোভি। চুরের বউ তো চুরই হয়। এক বাস্তব ঘটনা, বাংলাদেশের কোনো এক জায়গায় প্রতি রাতেই গরু চুরি হয়। তো এক ভদ্রলোকের ষাড় চুরি হয়েছে, তিনি লোকজনকে জিজ্ঞাস করছেন কে চুরি করতে পারে আমার ষাড়টি? একজন বলছে ঐ গ্রামের অমুখ নাম, ভদ্রলোক গেলেন ঐ গ্রামে, বাড়ীতে ঢুকে তিনি নাম ধরে ডাক দিলেন, চুরের স্ত্রী সে সময় বাড়ীর উঠানে কাপর শুকানোর জন্য- মেলে দিচ্ছিলেন, স্ত্রী শুনে বলেছিলেন আমার স্বামীকে এখন ডাকা যাবেনা, তিনি সারারাত চুরি করে এসেছেন অনেক ক্লান্ত, সন্ধার দিকে আসুন। ভদ্রলোক চুরের স্ত্রীর স্বামীর প্রতি দরদ আর ভালোবাসা দেখে অবাক হলেন। মনে মনে বললেন তার স্ত্রী ঘুমে থাকলে কেউ আসলে ডেকে দেয় অথচ চুরের স্ত্রীর কি প্রেম কি ভালোবাসা। স্বামীকে ডাকা যাবেনা, তিনি সারারাত চুরি করে এসেছেন এখন ক্লান্ত –।
সে যাক, আমি সামান্য একটি ঘটনার কথা বলি আমার অভিজ্ঞতা থেকে। বৃটেনের বিগত সাধারন নির্বাচন। লন্ডনের ওয়েম্বলীতে হিন্দুদের বড় একটি মন্দির, সেখানে আসবেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসেবে। মন্দিরে বৃটিশ ইন্ডিয়ান কমিউনিটির শীর্ষ ব্যাক্তিবর্গ সহ প্রায় হাজার পাচেক লোক উপস্থিত ছিলেন, আমি সহ আরো কয়েকজন দাওয়াত পেয়ে গিয়েছিলাম সেখানে। বরিস জনসন আসলেন, তিনি বক্তৃতা করলেন। বেরিয়ে আসার সময় দেখলাম এক জায়গায় বেশ কয়েকজন দাড়িয়ে আছেন , আমাদের গাড়ীটি যে জায়গায় পার্ক করা ছিল সেখানে দাড়িয়ে তারা কথা বলছিলেন ইংরেজীতে। বাংলা অর্থ হলো এই মহিলাকে কে নিয়ে এসেছে এখানে। আমরা কেউই ফটো তুলতে পারলামনা সে কাল পার্টিতে এসে আজ বরিস জনসন পর্যন্ত পৌছলো কি করে! সব দোষ তোমার। তুমি একেকটাকে মাথায় তুলে ফেলেছ। আমরা দিন রাত দলের জন্য কাজ করি, আর গতকাল যে মহিলা দলে এসেছে। দাপট দেখাবে তা তো হয়না। এ পর্যন্তই। আমি শুধু শুনেছিলাম কিন্তু কোনো মন্তব্য করার সুযোগ ছিলনা। তবে বুঝতে পেরেছিলাম ঐ যে আপনি মাঝে মধ্যে বলেন আমার দুর্দিনের কর্মীরা কিছুই পায়না ওরা শুধু দিয়েই যায়। তো লন্ডনের ওয়েম্বলীর মন্দিরের কথা থেকে বুঝতে পেরেছিলাম যাকে তারা দায়ী করছিলেন তাকে দেখতে কিছুটা আপনার দলের কাদের সাহেবের মত মনে হচ্ছিল। আমি কাদের সাহেবের সব কথা সব চরিত্র ভেঙ্গে লিখতে চাইনা- মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি সবই জানেন এবং বুঝেন। আমি এর আগেও দু/একটি কলাম লিখেছিলাম কাদের সাহেবের ব্যপারে সেখানে ঘড়ি কাদের স্যার হিসাবেই তাকে আখ্যায়িত করেছিলাম। আমাকে আমার আওয়ামীলীগের বন্ধুরা বেশ তিরস্কার করেছেন, তারা বলেছেন আমি নাকি ব্যক্তিগতভাবে ঘড়ি কাদের স্যারের পিছনে লেগেছি, আমি বলেছি আমার ব্যাক্তিগত কোনো রাগ, ক্ষোভ, অভিমান কাদের সাহেবের প্রতি নেই, আমি তাকে চিনিওনা। পরিচয় হওয়ার সুযোগও হয়নি। তার থেকে বরং আমি আওয়ামীলীগের দুজন সাধারন সম্পাদক কে চিনতাম। একজন ছিলেন সৈয়দ আশরাফ, আরেকজন ছিলেন জলিল সাহেব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আশরাফ সাহেবের বিরুদ্ধে কি কারো কোনো অভিযোগ আছে? বা ছিল? আশারফ সাহেব কি কাদের সাহেরেব মত মহিলাদের মাঝখানে দাড়িয়ে সেল্পি তুলেছেন? আশরাফ সাহেবের কি নারী ঘটিত কোনো কেলেঙ্কারি আছে? শুধু নারী ঘটিত কেলেঙ্কারি কেন বলি আশরাফ সাহেবের কি ঘড়ির প্রতি, অর্থের প্রতি, বিত্তের প্রতি, চিত্তের প্রতি কোনো দুর্বলতা ছিল? আমি যতটুকু তাকে চিনেছি জেনেছি কথা বলেছি তার দোষ একটাই ছিল তিনি একটু- করে ফেলতেন বেশী, শুনেছি সত্য মিথ্যা জানিনা রাতে অনেক সময় আপনিও তাকে টেলিফোনে পাননি। তিনি মরে গেছেন আমি ওসব নিয়ে লিখতে চাইনা। কিন্তু তিনি তো কারো দুই টাকা আত্মসাৎ করেননি, লন্ডনে যখন তিনি ছিলেন তার থাকার জায়গা ছিলনা, আমারই কিছু বন্ধুবান্ধবদের বাসায় তিনি রাত কাটাতেন। কিছুদিন আগে আপনিই তো বলেছিলেন একদিন খাওয়ার জন্য তিনি রেহানা আপার বাসায় যাবেন কিন্তু ট্রেনের ভাড়াটা কাছে ছিলনা। জলিল সাহেবের সাথে লন্ডনে দু/একবার দেখা হয়েছে মনে হয়েছে তিনি আসলেও জমিদার এবং ব্যাক্তিগতভাবে অনেক উচু মনের মানুষ—-। আল্লাহ তাদের দুজনকেই বেহেস্তের সর্ব্বোচ্চ সম্মানীত স্থানে অধিষ্টিত করুন, আমীন। আর এখনকার সেক্রেটারী দেখলে মনে হয় তিনি এ জীবনে অনেক কিছুই করতে পারেননি, ক্ষমতা পেয়েছেন এখন তিনি ঘড়ি থেকে শুরু করে স্যুট টাই সব পরবেন। পরেন তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু নিজের বেতনের টাকায় পরতে হবে। এর পর আপনি বসিয়েছেন একজন স্বরারষ্ট্রমন্ত্রী, স্মৃতি যদি আমার সাথে প্রতারনা না করে তাহলে উনি কি এক সময় ফার্মগেট এলাকায় বসবাস করতেন? তাকে কি কোনোভাবে রাতে রিকসায় তুলা হতো———? জানিনা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি সব জানেন। আপনি যাদেরকে বসিয়েছেন বিভিন্ন জায়গায় তারা কারা? ওয়ার্ড কমিশনারের যোগ্যতা যাদের নেই তাদেরকে যদি আপনি মন্ত্রী বানিয়ে ফেলেন তাহলে ব্যপারটি অপাত্রে অনুগ্রহ হয়ে যায় না? ঐ যে একটি কথা আছে না, অপাত্রে অনুগ্রহ করে যে জন পায় সে ফল তার বিরহ বেদন” । সৈয়দ আশরাফ সাহেব যখন আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী হন তখন এই দলের ডিমান্ড বেড়ে যায়, দলের মান ইজ্জত আকাশ ছোয়া হয়, কথা বলতে ইচ্ছে করে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই আওয়ামীলীগ তো বঙ্গবন্ধুর দল। এই আওয়ামীলীগ তো স্বাধীনতার দল, এই আওয়ামীলীগ তো স্বাধীনতার সময় নেতৃত্বদানকারী দল। এই দলে কেন পাপিয়ারা জন্ম নিবে? এ দলে কেন ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট জন্ম নিবে? এই দলে কেন অপু উকিলরা জন্ম নিবে? এই দলে কেন নাজমারা জন্ম নিবে? আপনি যদিও এদেরকে এখন গ্রেফতার করছেন আইনের আওতায় নিয়ে আসছেন কিন্তু ইতিহাসে তো এসব ঘটনা লিপিবদ্ধ হচ্ছে। এসব ইতিহাস থেকে নতুন প্রজন্ম কি শিখবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? আজ পাপিয়া গতকাল সম্রাট, এর আগে ছিল শেয়ার মার্কেট , বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, এ ভাবে যদি একটার পর একটা ঘটনা চলতেই থাকে তাহলে আপনার সরকারের কোনো গ্রহনযোগ্যতা তো থাকবেনা। এমনিতেই তো আপনার সরকারের কোনো গ্রহনযোগ্যতা নেই, আপনি বা আপনার সরকার যতই বলনু না কেন গত দুটি নির্বাচন সুষ্ট হয়েছে কিন্তু মানুষ তো জানে কি হয়েছে! শেষ পর্যন্ত ঢাকা সিটি নির্বাচনও তো আরেকটি ডিজাষ্টার। অপু উকিলকে নাকি বলা হয়েছিল পাপিয়াকে সাধারন সম্পাদক পদটি না দিতে, কিন্তু তিনি তা মানেননি, তিনি ঢাকায় এসে কমিটি ঘোষনা করেছিলেন এবং পাপিয়াকেই সাধারন সম্পদাক করা হয়েছিল। এখানে আমার কাছে মনে হয় টাকার খেলা চলে। সব জায়গায়ই নাকি এখন টাকার খেলা, টপ টু বটম সব জায়গায় টাকার হোলি খেলা চলছে। আপনি অবশ্য চেষ্টা করছেন কিন্তু কতটুকু পারবেন আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে, কারন সমস্যা তো আপনার ঘরেই, আপানার আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে। সাবেক স্বররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে দিয়ে কেন তিনি চলে গিয়েছিলেন সব খবরই তো জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী , সব কিছ্ইু তো লেখা যায়না বলাও যায়না। ইদানিং আমাকে বলা হচ্ছে আমি নাকি বেশী লিখে ফেলতেছি, এমন সব কথাবার্তা আমাকে বলে আমি অবাক হই। আপনার আওয়ামীলীগের লোকরা দুর্নীতি করবে আমি লিখতে পারবোনা ? আপনার লোকেরা অবৈধভাবে টাকার পাহাড় গড়বে আমি লিখবোনা? আপনার লোকেরা লন্ডনে কার মাধ্যমে টাকা নিয়ে এসে এখানে বাড়ী ঘর ক্রয় করে তা তো সবই জানি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি লন্ডনে থাকি দেশে বসে আমাকে হুমকী দেয়। অনেকেই লন্ডন থেকে ফোন করে হুমকি দেয়। যারা হুমকী দেয় তাদেরকে সবিনয়ে আমি বলি আমাকে হুমকি দিবেননা। কারন আমি তো কোনো দল করিনা। আমি আওয়ামীলীগও করিনা বিএনপিও করিনা। যা সত্য তা লিখি এবং বলি, এবং সততার সহিত বলি। কারো কাছ থেকে দুটাকা খাইও না পরিওনা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যদি সব জানেন বুঝেন তাহলে এসব সোসেল ক্লাইমারদের কেন বসান বিভিন্ন পদে? যারা গরীব, যারা বংশে ওয়েস্টিন দেখেনি তারা তো সময়ের সিড়ি বেয়ে উপরে উঠার একটা সুযোগ খোজে। ভিডিও ক্লিপে পাপিয়াকে দেখলাম হোটেল ওয়েস্টিনে ককটেল পান করছে, এই ককটেল পান করাটাও তো শিখেনি। কিন্তু নীরিহ মেয়েদেরকে দিয়ে ব্যবসা ঠিকই শিখেছে। আপনি কি মনে করেন পাপিয়ার ঘটনা, ব্যবসা, পুলিশ প্রশাসন, ডিবি,র্যব কেউ জানেনা? সবাই জানে। পাপিয়ার একটি বক্তব্য ভাইরাল হয়েছে, বলেছে বেশী বাড়াবাড়ি চাপাচাপি করবেননা সব বলে দিব, মরলে সবাইকে নিয়েই মরবো! আমার কেন জানি মনে হচ্ছে পাপিয়াকে ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলা হবে? এর আগে তো অনেককেই ক্রস ফায়ারে হত্যা করা হয়েছে। নয়ন বন্ড কে হত্যা করেছিল কেন? আমরা বুঝিনা। নয়নকে হত্যা না করলে আপনার দলের এমপি, এমপি পুত্র পুলিশ প্রশাসন সবই তো ফেসে যেতো!!
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পত্র পত্রিকায় দেখি আপনি সৎ নিষ্টাবান আওয়ামীলীগার খোজছেন, আমি আপনাকে সবিনয়ে বলি আপনার দলের এই মুহুর্তে যারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বা পদে রয়েছেন তাদের৩/৪ জনকে যদি আপনি সরিয়ে দেন, আমলাদের মধ্যে ৫/৬ জনকে পুলিশ র্যব, ডিবি থেকে দেখে দেখে যারা বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম তাদেরকে যদি সরিয়ে দেন আপনার সরকার ঠিক হয়ে যাবে। আপনি বৃটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের দিকে তাকান, ২ মাস বয়সী সরকার, আাগমী মাসে বাজেট দিবে বৃটিশ সরকার, সরিয়ে দিয়েছে তার অর্থমন্ত্রী, যেটাকে বলা হয় চ্যান্সেলর। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থাকেন ১০ নং ডাউন ষ্ট্রীটে, চ্যান্সেলর বা অর্থমন্ত্রী থাকেন ১১ নং ডাউনিং ষ্ট্রীটে , বরিস জনসন কেয়ার করেননি, অথচ অর্থমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ কোনো দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেননা, তার অপরাধ তিনি কথা শুনেননি। আপনি তো অনেক কেয়ার করেন। আপনি অনেক সময় ভয়ও পান। সরকার কিন্তু আপনার, সব ব্যর্থতার দায় আপনার, সফলতার দায়ও আপনার। একটি সুত্র বলেছে বরিস বলেন নির্বাচনে বৃটিশ জনগন আমাকে কনজারভেটিব দলকে ভোট দিয়েছে,” নো মাংকী বিজনেস”। ফালতুমি আর ফাজলামীর কোনো জায়গা নেই। আপনার সরকারকে যারা প্রশ্ন বিদ্ধ করবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি তাদেরকে উষ্টা মেরে সরিয়ে দেন। সে যেই হোন না কেন! এই যে নেতাগুলো এই যে আমলাগুলো যারা দুর্নিতী করে তাদের কত টাকা চাই, তাদের কত নারী চাই? পাপিয়ার কল লিষ্টে যে সব মন্ত্রী এমপি রয়েছেন তাদের সবাইকে দু’টা করে বিয়ে দেন। যারা পাপিয়ার নিরীহ মেয়েদেরকে নষ্ট করেছে তাদের ছেলেদের সাথে অথবা তাদের সাথেই বিয়ে দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাতে আপনি নেকী পাবেন। এই বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন নেতা আমলার তো কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার। কি রোমান্টীক টেস্টরে বাবা, রাশিয়া থেকে থাইল্যন্ড থেকে মেয়ে নিয়ে এসেছে কাষ্টমারদের ডিমান্ড ফুলফিল করার জন্য। এমনকি পাহাড়ী মেয়েদেরকেও নিয়ে এসেছে। পাপিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা বলেছেন, পাপিয়া বলেছেন প্রত্যেকটি পুরুষ মানুষের নারীর প্রতি দুর্বলতা রয়েছে। অত্যন্ত সত্য কথা। নারীর প্রতি দুর্বলতা থাকবে, কিন্তু যে নেতা বা আমলার অবৈধভাবে নারীর প্রতি দুর্বলতা থাকবে সে যখন ধরা পড়বে অবশ্যই তাকে পদত্যাগ করে চলে যেতে হবে। এটাই জগতের নিয়ম, এই তো কদিন আগে নর্দান আয়ারল্যান্ডের সেক্রেটারী জুলিয়ান স্মীথকে সেক করেছেন বরিস জনসন। যে কারনে সেক করা হয়েছে সেটি লিখতেও আমার রুচিতে বাধছে———। আপনার এক সময়ের অত্যন্ত কাছের মানুষ লন্ডনের লেবার পার্টির কিথভাজ এমপি সাহেবকে যখন এক অপরাধে হাউস অব কমন্স সাসপেন্ড করেছিল তখন তিনি নিজেই রাজনীতি থেকে সরে দাড়িয়েছেন। পশ্চিমা দেশগুলোর রাজনীতির বিউটি হচ্ছে এটি। অপরাধীরা অপরাধ স্বীকার করে নিয়ে সরে দাড়ায়। আর আমাদের হচ্ছে গণভবনে আপনার সাথে শেষ দেখা করে পায়ে হাতে ধরে শেষ রক্ষা হয় কি-না সেটার একটি বিহীত ব্যবস্থা করা। বেহায়া নির্লজ্জ। শুনেছি পুরুষ মানুষ একটু নির্লজ্জ হয়। কিন্তু মহিলা, অপু উকিল এবং আপনার নাজমা বেগম আপনার সাথে দেখা করার জন্য আবার গণভবনে যায়। এদের অবস্থা দেখলে লজ্জাও মুখ লুকিয়ে হাসে।
বিঃদ্রঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি একটি আইন করুন, যার যত খুশী দুর্নীতি করো তাতে কোনো আপত্তি নেই, ধরা খেলে জেল জরিমানা সব দিয়ে তারপর বিদায় হবেন। বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থেচারের সময় এক ভদ্রলোক নাম ছিল জেফ্রি আর্চার, কনজারভেটিব পার্টির ডেপুুটি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ১৯৮৫-৮৬ সাল পর্যন্ত। এমপি ছিলেন ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৪ ইংরেজী পর্যন্ত। তিনি নোভেলিস্ট ছিলেন, এতটাই জনপ্রিয় লেখক ছিলেন তার বই ”নট এ পেনি মোর, নট এ পেনী লেস” এবং আরো দুটি বই বিক্রি হয়েছিল ২৭৫ মিলিয়ন কপিস পুরো পৃথিবী জুড়ে। তার অনেক দোষের মধ্যে একটি দোষ ছিল তিনিও পাপিয়াদের মত মহিলাদের ব্যবহার করতেন, ব্যবহার করে আবার কোর্টে দাড়িয়ে মিথ্যা কথা বলতেন, ডেইলী ষ্টার নামক পত্রিকা তার বিরুদ্ধে নিউজ করলেও তিনি বলতেন তিনি পাপিয়াদের মত মহিলাদের জলসায় রাত্রি যাপন করেননি, একজন দেহব্যবসায়িকে টাকা দেননি, সেই কথাই তার জন্য কাল হয়েছিল, তিনি চার বছর জেল কেটেছিলেন, জেল কাটার মধ্যে দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি হয়েছিল বড় করুনভাবে। তৎকালীন সময়ে ডেইলী ষ্টারের এডিটর পিটার হিলের বক্তব্য এভাবেই ছেপেছিল পত্রিকাগুলো ”নো ওয়ান সোড হেভ এনি সিম্প্রেথী ফর জেপ্রি আর্চার সেইড দ্য এডিটর পিটার হিল, হি ইজ এ প্রোভেন লায়ার, এ চিট —- এ ম্যন সো এরোগেন্ট দেট হি থট হি ওয়াজ এভব দ্য লো, নাউ হি হেজ গটেন হোয়াট হি ডিজার্ভ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে সবিনয় অনুরোধ যারা পাপিয়াকে এ পথে নামিয়ে দিতে সাহায্য করেছে তাদেরকে জেফ্রি আর্চারের মত বিচারের কাটগড়ায় দাড় করান, ইতিহাস সৃষ্টি করে যান। আপনার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাহেব দেশ জন্ম দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন, আর আপনি দুর্নীতি বিষদাত ভেঙ্গে দিয়ে সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। কেউই বিচারের উর্ধ্বে নন এটিই প্রমান করুন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সৎপথে চলার তৌফিক দান করুন, আমীন।
লেখক সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম
সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ
সাবেক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
ইমেইল rafcbanglastatement@yahoo.com
৩ মার্চ ২০২০ ইংরেজী মঙ্গলবার