ভোটাধিকার নিয়ে বাজে বলবেননা হাইকমিশনার তাসনিমা মুনা, চ্যানেল আই ইউরোপ আওয়ামীলীগ সরকার যেভাবে বন্ধ করেছিল!!!
প্রকাশিত হয়েছে : ১১:৩৩:০০,অপরাহ্ন ১৫ মার্চ ২০২০ | সংবাদটি ১৭৭০৯৩ বার পঠিত
রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী
দুরন্ত মানুষ ছিলাম, ছিলাম রৌদ্র রোষ যুবক, সময় ও সাময়িকতার ইঞ্জিন নৌকা চালাতে চালাতে জীবনের মধ্যাহ্নে সমাগত, প্রেমিক গানগুলো এখন শাহ আব্দুল করিমের ” চলিতে চরন চলে না দিনে দিনে অবশ হই আগের বাহাদুরী এখন গেল কই——-। ভাবও ভাবনার এখন নিজেই কুস্তি লড়ি, নীতি আজ নৈতিকতার বক্তব্য ভারে নত শয়তানের পায়ের সামনে, ও মন আর চাও কি? বাদামতেলের উর্ধ্বমুল্য লজ্জিত আজ ঘি!
জীবন ও সময়ের কথা বললাম বন্ধু——–।
প্রিয় পাঠক উপরের কথাগুলো আমার মাসুক ইবনে আনিস নামক কবি বন্ধুর। বন্ধুর সাথে প্রায়ই আমার কথা হয়। দেশের আর্থ সামাজিক রাজনৈতিক ব্যাক্তিগত প্রেম ভালোবাসা এমন কোনো বিষয় নেই যা আলোচনা হয়না। সেদিন বন্ধুর সাথে আলাপ করেছিলাম এক সময় গান শুনতাম প্রেমের গান, “মিলন হবে কত দিনে, আমার মনের মানুষেরও সনে——- সে যে কেন এলো না কিছু ভালো লাগেনা———, যাবার আগে দোহাই লাগে একবার ফিরে চাও আবার তুমি আসবে ফিরে আমায় কথা দাও—-, এক নজর না দেখিলে বন্ধু দুনিয়া আন্দাইর হয়——-। আর এখন শুনতে হয় চলিতে চরন চলেনা দিনে দিনে অবস হই আগের বাহাদুরী এখন গেল কই——-, না লইলাম আল্লাজির নামরে না করলাম তার কাম মিছা কাজে পাগল মন আর দিন গুয়াইলামরে—— বারী সিদ্দিকীর সোয়া চাঁন পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছনাকি——-। এ সব গান আমি মধ্যরাতে মাঝে মাঝে টেমসের পাড়ে নীরবে নিভৃতে শুনি। আমার মন যখন উদাস উদাস করে, চাদনী রাতে। আকাশের দিকে চেয়ে থাকি আর গান শুনি, মাঝে মধ্যে অবশ্য স্ত্রীর ডাকে সারা দিয়ে বাসায় চলে আসতে হয়, নতুবা একশ প্রশ্নের জবাব কে দিবে? কোথায় চিলে এতক্ষন? কোন বান্ধবীর সাথে? স্ত্রী তো আর বান্ধবী বলে না বলে কোন——-।
সে যাক, আমার সমালোচকরা বলেন আমি নাকি দিন দিন যুবক হচ্ছি—–, ইদানিং আমি কিছুটা স্বাস্থ্য কমিয়েছি। একুশে গানের রচিয়তা গাফফার ভাই বেশ কিছুদিন আগে আমাকে দেখে চিনতে পারেননি। বলেছিলেন তুমি স্বাস্থ্য কমিয়েছ? বলেছিলাম জ্বী গাফফার ভাই , বলেছিলেন স্বাস্থ্য কমিয়ে তো আরো স্মার্ট হয়েছ, আরো কিছু মহিলাদের জীবন নষ্ট করবে আর কি? বলেছিলাম গাফফার ভাই মহিলারা তো আমার জীবন নষ্ট করে, আমি তো কারো জীবন নষ্ট করিনি, আমি তো কাউকে গিয়ে বলিনা যে আমি তোমাকে ভালোবাসি। এই লন্ডনে অনেকেই আমার বিরুদ্ধে বলে সেদিন এক মহিলা নেত্রী আমাকে এ রকমই একটা অপবাদ দিয়েছেন, তিনি বলেছিলেন অমুখ মহিলাকে তো আপনি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন? বলেছিলাম আপনি যার কথা বলছেন আমি তো তাকে কোনোদিন দেখছি বলে মনে হয়না। সে যাক, আমার ভায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভূলিতে পারি গানের রচিয়তা সাংবাদিক সাহিত্যিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী আমাদের প্রিয় গাফফার ভাইয়ের ২০১৫ সালে সম্ভবত ৮০ তম জন্মদিনে আমি বলেছিলাম গাফফার ভাই আপনি শতায়ু হোন, গাফফার ভাই বলেছিলেন শতায়ু হয়ে লাভ কি? কোনো কিছু না দাড়ালে আর নিজে দাড়াতে যদি না পারি তাহলে এ শতায়ুর কোনো দরকার আছে? গাফফার ভাইর কথাটিকে যদি সত্যি বলে ধরে নেই তাহলে একশ বছর বাচার কোনো দরকার নেই, তবে মানুষ যেমন ইচ্ছে করলেই মরতে পারেনা- ইচ্ছে করলে বাচতেও পারেনা। তবে ভালোবাসার মানুষ পেলে এ্ই গানটিই মানুষ শুনে-ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, তোমায় নিয়ে হাজার বছর বাচতে বড় ইচ্ছে হয়—। আমি ইদানিং এই গানটি বেশী শুনি, কারন আমার এখন হাজার বছর বাচতে ইচ্ছে করে———-।
সে যাক, লন্ডন হাইকমিশন নিয়ে অনেকদিন লেখা হয়নি। অনেকেই অনেক ধরনের অভিযোগ করেন, শুনি, আগে মাঝে মধ্যে যাওয়া আসা ছিল হাইকমিশনে, বেশীদিন আগের কথা নয়, তখন হাইকমিশনে ছিলেন ফাস্ট সেক্রেটারী মনিরুল ইসলাম কবির, শিরীন আক্তার, প্রেস মিনিস্টার ছিলেন শহীদ পরিবারের সন্তান নাদেম কাদের, সুদর্শন নাদেম কাদের সাহেবকে প্রথম দিন দেখে আমি ভেবেছিলাম লন্ডনের কোনো পপ সিঙ্গার, চুল পিছন থেকে লম্বা, কানে রিং, ভালোই তো ষ্টাইল, পররর্তীতে দেখলাম তিনি শুধু ষ্টাইলে ভালো নন কাজও ভালো করেন। এক সময় আমি নিজেই ছেরা জিনসের পেন্ট, স্টেপ কাট চুল মাথার চামড়া দেখা যেত, বাবা একদিন দেখে মা-কে জিজ্ঞাস করেছিলেন ওর কি হয়েছে, মা বলেছিলেন একটু ষ্টাইল করছে জোয়ান পোলা, বাবা ডেকে জিজ্ঞাস করলেন তুমি এ ছেরা পেন্ট কোথা থেকে ক্রয় করেছ,আর কানে এসব কি? রিং তো মেয়েরা পরে, বাবাকে বুঝানোর চেষ্টা করেছিলাম বাবা এসব ষ্টাইল, বাবা বললেন এ পৃথিবীতে অনেক ধরনের বোকা ছেলে মেয়ে দেখেছি, পয়সা দিয়ে ছেরা পেন্ট ক্রয় করে, আমার ছেলে এত বোকা হতে পারে তা ছিল আমার কল্পনার বাইরে। বাবার কথা ছিল তোমার এসব ষ্টাইল আমার পছন্দ না এসব পরিবর্তন করে ভালো পেন্ট পরে বাইরে যাও। বাবা পছন্দ করেন না, কি আর করা, তবে তৎকালীন সময়ে আমার একজন বান্দবী ছিল সে-ই আমাকে এসব পছন্দ করে কিনে দিত। সে যাক, সেটি আরেক প্রসংঙ্গ। শিরীন আক্তার, কবীর ভাই যখন লন্ডন ছেড়ে চলে যায়, শুনেছিলাম তারা চলে যাবে, আমার মনটা খুবই খারাপ হয়েছিল, কবীর ভাইর জন্য আমার কষ্ট হয়েছিল, তার স্ত্রীর দুঃখজনক মৃত্যু আমাকে খুবই কষ্ট দিয়েছিল, দুটি বাচ্চা নিয়ে কবীর ভাই কেমন আছে জিজ্ঞাস করা হয়নি। মনিরুল ইসলাম কবীর ফাস্ট সেক্রেটারী হিসেবে যতটুকু করেছেন সিলেটের কুলাউড়ার জুবের সাহেব, ডেপুটি হাইকমিশনার ছিলেন তালহা সাহের, শিরীন আক্তার, নাদেম কাদের সাহেবরা যতটুকু করেছেন লন্ডন হাইকমিশনে বসে এখনকার যারা রয়েছেন তারা তাদের অনুসরন করতে পারেন । কবীর ভাইর সাথে সম্পর্ক অনেক দুর গড়িয়ে ছিল, নাদীম কাদের শিরীন আক্তার কবীর ভাই ওরা বন্ধুর মত হয়ে গিয়েছিল, হাইকমিশনে গত ৩০ বছরে অনেকেই এসেছে আবার চলেও গেছে, কয়জনের কথা মানুষ মনে রাখে? যারা ভালো মানুষ তাদের কথা মনে রাখে, বার্মিংহামে ছিলেন এসিটেন্ট হাইকমিশনার জুলকারনাইন সাহেব শুনেছিলাম তিনি লন্ডনে চলে এসেছেন ভেবেছিলাম দেখা করবো তা আর হয়ে উঠেনি, জুলকারনাইন সাহেব বিরাট একটা কাজ করেছেন দেশের জন্য। এটি নিয়ে আরেকদিন আলাদা করে লিখবো। কবীর ভাইর সাথে যোগাযোগ হয়, নাদীম কাদের ভাইর সাথে সম্প্রতি যোগাযোগ হয়েছে, শিরীন আক্তারকে মাঝে মধ্যে ফেইসবুকে দেখি ছবি পোষ্ট করেন ভালোই আছেন মনে হয়। তবে শিরীন আক্তারের সাথে যোগাযোগ হয়না, মহিলা মানুষ, ইচ্ছে করেই করিনা। কারন বিবাহিত মহিলাদের সাথে যোগাযোগ না করাই উত্তম। কিন্তু আমাদের সমাজের লোকরা কোনো কিছু মানে না, মহিলা একটার ফেইসবুকে ছবি দেখলেই হলো, মনে হয় বংশে মহিলা দেখেনি। সে যাক, ভেবেছিলাম নাদীম কাদের ভাই দেশে গিয়ে আমাকে বিয়ের নিমন্ত্রন পত্র পাঠাবে কিন্তু এখনো পাঠাননি, বিযে অজকাল কে কোনদিকে করে ফেলে বলেওনা। না বলুক না বলেও যদি নাদিম ভাই কুকিলের মত বাসা বেধে ফেলে সেখানে আমার শুভ কামনা জানানো উচিৎ, এবং আমি তাই করতে কোনো রকমের অবহেলা করবোনা।
সে যাক আজ যার কথা লিখতে বসেছি তিনি লন্ডনের বাংলাদেশ হাইকমিশনে এক সময় ছিলেন প্রেস মিনিষ্টারের দায়িত্বে। সেটি খুব সম্ভবত ওয়ান ইলেভেনের সময়। সাঈদা মুনা এর পর চলে গিয়েছিলেন দেশে, দেশ থেকে তিনি সম্ভবত থাইলেন্ডের এম্বেসেডর হিসেবে কাজ করেন, সেখান থেকে লন্ডনে চলে আসেন হাইকমিশনার হয়ে, এখন তিনি মাননীয় হাইকমিশনার। লন্ডনে আসার পর আমার সাথে আর দেখা হয়নি। তবে তিনি বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশ যে একটা গনতান্ত্রিক রাষ্ট্র? তা তুলে ধরার চেষ্টা করছেন এবং তিনি করবেন এটাই তার চাকুরী। চাকুরী তাকে রক্ষা করতেই হবে। এর আগে ওয়ান ইলেভেনের সময়ও তাকে চাকুরী রক্ষা করতে হয়েছে। ওয়ান ইলেভেনের সময় সরকারের যে সব বক্তব্য তিনি তুলে ধরেছিলেন সেগুলো হয়তো বিভিন্ন আর্কাইভে খোজলে পাওয়া যাবে। আমি সেগুলো খোজতে যেতে চাইনা। মুনাকে আমি কিছু বলতে চাইনা। তবে দু একটি বিষয়ে অনুরোধ করতে চাই, মুনা আপনি এবং আপনার সরকার গনতান্ত্রিক সরকার? ভোটে পাশ করে সরকার গঠন করেছে সেটি বলুন তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু কিছু বিষয় আছে বলবেননা বলার চেষ্টা করবেননা প্লিজ, তাতে আমার মত মানুষের বিভ্রত হতে হয়। যেমন আপনি বা আপনার সরকারের তথ্যমন্ত্রী যখন বলেন দেশে সংবাদপত্র অথবা মিডিয়ার স্বাধীনতা রয়েছে তখন বলতে হয় ”ধরণী দ্বিধা হও”
মাননীয় হাইকমিশনার সাইদা মুনা আপনাকে আমি কোনো কিছুতেই এডভাইস দিতে চাইনা। আপনার এডভাইসের দরকারও নেই। আপনার কেউ যদি এডভাইসার না থাকে তাহলে যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগ তো আছেই, সেটি থাকবে। আপনারা যে বিভিন্ন ফোরামে বলেন মিডিয়ার স্বাধীনতা আছে, কিভাবে আছে? আমাকে কি একটু ব্যখ্যা করবেন? দেশে সাংবাদিকরা লিখতে পারেনা, রিপোর্ট করতে পারেনা, সকালে রিপোর্ট করলে বিকেলে হয় গ্রেফতার নতুবা গুম। বাদ দেন দেশ, এই লন্ডনে আমার গল্প আপনাকে শুনাই, আমি যতটুুক জানি চ্যানেল আই ঢাকার সাথে আপনার ভালো একটি সম্পর্ক রয়েছে। চ্যানেল আই লন্ডনে কেন বন্ধ? কারা বন্ধ করেছে? সেটি জানতে হলে চ্যানেল আই ঢাকার এমডি জনাব ফরিদুর রেজা সাগর ও গণমাধ্যম ব্যাক্তিত্ব শাইখ সিরাজ সাহেবের সাথে একটু যোগাযোগ করতে হবে। তবে তার আগে আমার কাছ থেকে কিছুটা জেনে নিন, সত্য মিথ্যা জানিনা এটি সিরাজ ভাইয়ের বক্তব্য যা তিনি আমাকে লন্ডনের ক্যানারি ওয়ার্ফে ব্রিটেনিয়া হোটেলে দাড়িয়ে বলেছিলেন, তিনি আমাকে বলেছিলেন তোমার কারনে একটি গোয়েন্দা সংস্থার অফিসে আমাকে এবং সাগরকে ২ ঘন্টা বসে থাকতে হয়েছে। যে লোক শ্রদ্ধা করে কথা বলতো সেই লোকই কি ভাব নিয়ে বলে “সরি“ সিরাজ ভাই আপনাদেরকে বসিয়ে রাখার জন্য। সেই কর্মকর্তা তার অধস্তন কর্মকর্তাকে আদেশ করেছিলেন এই- লন্ডন চ্যানেল আই এর ফাইলটি নিয়ে আসোতো। আমি এসব কথা শুনে সিরাজ ভাইকে জিজ্ঞাস করেছিলাম সিরাজ ভাই আমার নামে কিসের ফাইল? আমি কি লন্ডনে চুরি করে চ্যানেল চালাই? না ডাকাতি করে চ্যানেল চালাই? না আওয়ামীলীগ করি না বিএনপি করি? সিরাজ ভাই বলেছিলেন তুমি তো সরাকারের গাইড লাইন মানতে চাও- না, বলেছিলাম কোন সরকারের গাইড লাইন? বাংলাদেশ সরকারের গাইড লাইন? আমি কথা বাড়াইনি। আমার জানতে ইচ্ছে করেছিল আমি টেলিভিশন চালাই লন্ডনে, গাইড লাইন যদি মানতে হয় তাহলে আমার তো বৃটিশ সরকারের গাইড লাইন ফলো করা উচিৎ, মানা উচিৎ। গল্পের সমাপ্তি করতে চাই। ২০১৮ সালের আগষ্টে ঢাকা চ্যানেল আই থেকে ইমেইল রিসিভ করি লন্ডনে চ্যানেল আই বন্ধ করার জন্য, এবং যদি না করি তাহলে তারা আইনের শরনাপন্ন হবেন বলে আমাকে ইমেইলে লিখিত হুমকি প্রদান করেন। সেই সংক্রান্ত ইমেইল রয়েছে আমার কাছে আপনি চাইলে আপনাকে দিতে পারি। এ জন্য আপনাকে সবিনয়ে বলি আপনি বৃটেনের মেইনষ্ট্রীমের কোথাও বলবেননা যে দেশে মিডিয়ার স্বাধীনতা রয়েছে । আপনি যদি এভাবে বলেন তাহলে আমাকে বলতে হবে মাননীয় হাইকমিশনার যা বলেছেন তাতে বিনয়ের সাথে আমি দ্বিমত পোষন করছি, কারন বৃটিশ সরকারের যে সব জায়গায় আপনার যাতায়াত রয়েছে সেখানের বেশ কিছু জায়গায় আমি দাওয়াত পেলে যাই। দেশে মিডিয়ার কোনো স্বাধীনতা নেই এমন কি লন্ডনে বাংলাদেশের একটি টেলিভিশন চালাতে পারিনি, সরকারের হাইকমান্ডের নির্মম অত্যাচারে। চ্যানেল আই ইউরোপ বন্ধ হওয়ার কারন এবং শুরুটা ছিল তারেক জিয়া সাহেব কে কেন্দ্র করে । ২০১৪ সালে একটি টক শো হয়েছিল চ্যানেল আইর লন্ডন ষ্টুডিওতে, যিনি উপস্থপানা করেছিলেন তিনি ছিলেন চ্যানেল আই ইউরোপের ডিরেক্টর, জনাব শ্হা আক্তার হোসেন টুটুল, তিনি তরেক রহমান সাহেবের জন্মদিন উপলক্ষে একটি টক শো করেছিলেন বিএনপি যুক্তরাজ্য কমিটির নেতাদেরকে নিয়ে, সেই থেকে যাত্রা। ঘটনার পর দিনই সাগর ভাই ঢাকা থেকে ফোন করে আমাকে বলেছিলেন এসব করার দরকার কি, যে উপস্থাপনা করেছে তাকে কোনোভাবে বের করে দাও চ্যানেল থেকে। তারপর আমার টক শো ষ্ট্রেইট ডায়লগ নিয়ে সমস্যা হয়েছে। সিরাজ ভাই এটিও শেষের দিকে বলেছিলেন তোমার ষ্ট্রেইট ডায়লগ কিছুদিনের জন্য বন্ধ রাখ। আমি অনেকদিন বন্ধ রেখেছিলাম, কিন্তু কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত আপনার সরকার বন্ধ করেছে চ্যানেল আই ইউরোপ ঢাকা চ্যানেল আই কে দিয়ে। আমি কোনো প্রতিবাদ করিনি। কারন প্রতিবাদ করে লাভ নেই। যে সরকার ভোটে নির্বাচিত নয় সে সরকারের সাথে আমি দেন দরবার করে পারবনা। তা ছাড়া ঢাকা চ্যানেল আই তো বিপদে, বেশী বারাবারি করলে ঢাকা চ্যানেল আই আপনার গনতান্ত্রিক সরকার? যদি বন্ধ করে দেয় তাহলে কার গলায় ধরে কাদবে শাইখ সিরাজ ভাই এবং সাগর ভাই?
দ্বিতীয় যে কারনটি নিয়ে আপনাকে লিখা সেটি হচ্ছে আপনি এবং দেশের অপদার্থ নির্বাচন কমিশনার প্রেস কনফারেন্স করেছেন কিছু দিন আগে লন্ডন হাইকমিশনে, সেখানে ভোটাধিকারের ব্যপারে কথা বলেছেন। তারপরে আপনি মিটিং করেছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে। এখানে সবিনয়ে বলি যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের কোনো অবদান নেই প্রবাসীদের ভোটাধিকারের ব্যপারে। আপনি যে অপদার্থ নির্বাচন কমিশনার নিয়ে সেদিন প্রেস কনফারেন্স করেছেন এসব করবেননা প্লিজ। আমি হলে তো সেখানে সমস্যা হয়ে যেত——। উনি নাকি আমাদেরকে বলেছেন দ্বৈত নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট দেওয়ার জন্য!! আপনিও সেখানে বাজে কথা বলেছেন, আপনি নাকি বলেছেন পৃথিবীর কোথাও এই নিয়ম নেই যে এক দেশের নাগরিক অন্য দেশে গিয়ে ভোট দিতে পারে। প্রিয় মুনা আপনার জ্ঞানের গভীরতা কতটুকু আমি জানিনা। আপনি কি প্রপেশনাল ডিপ্লমেট তা-ও আমি বলতে পারিনা। আপনার জ্ঞানের গভীরতা আর জীবনের গভীরতার মধ্যে বিস্তর ফারাক লক্ষ করছি। জীবনের গভীরতার মধ্যে ফারাক হলে সমস্যা নেই। তবে এবার লন্ডনে আসার পর আপনার রুপেরও গভীরতা লক্ষ করছি। ঐ যে রবীন্দ্রনাথের গান একটা ছিলনা, আমি রুপ সাগরে ডুব দিয়েছি, অরুপ রতন আশা করি” আপনার কাছ থেকে আমরা কি আশা করি মুনা? আপনার কাছ থেকে আমরা আশা করি, উন্নততর কথা বার্তা, আমরা সস্তা কথা আশা করিনা। আমারা বৃটিশ বাঙালীরা আশা করি আপনি আপনার গনতান্ত্রিক? সরকারের কাছ থেকে আমাদের ভোটাধিকারের ব্যপারটি সহজেই এনে দিবেন। যদিও এখন ভোট দেয়ার প্রয়োজন হয়না, আপনার সরকার ভোট কেন্দ্রে ভোটাররা যাক সেটি চায়না। না চাইতে পারে , তারপরও আমরা ভোটাধিকার আমাদের আয়ত্তে রাখলাম। আপনার অবগতির জন্য বলি আপনি যে দেশে বসে কথা বলছেন সে দেশে তো বাঙালী এ পর্যন্ত ৪ জন এমপি হয়েছে। আপনাদের নেত্রীর বোনের মেয়েও তো এমপি, এখানে বৃটিশ বাঙালীরা শুধু ভোটই দিতে পারেনা, এমপিও হতে পারে। আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় আমাদের বাবা চাচারা অনেক অবদান রেখেছেন। তৎকালীন সময়ে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ পাউন্ড যুদ্ধের জন্য পাঠিয়েছিলেন। সেই টাকার চক্রবৃদ্ধি হারে যে শোধ আসে সেটি কি শোধ করতে পারবে বাংলাদেশ? দেশ স্বাধীনের পর আপনি তো উপমন্ত্রীর মর্যাদায় হাইকমিশনার হয়েছেন, আমি কি হলাম মুনা? আমি তো লন্ডনীর পোলা লন্ডনীই রয়ে গেলাম। যারা বৃটেন থেকে যুদ্ধের সারাঞ্জাম পাঠালো তারা বিনিময়ে কি পেল? কি দিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ এই বৃটেন প্রবাসী বাঙালীদের? সামান্য এক ভোটাধিকার চেয়েছে তার জন্য যে কত কথা শুনতে হয় আপনাদের কাছ থেকে। যারা এসে কথা শুনিয়ে যায় বৃটেন প্রবাসী বাঙালীদের তাদের সবিনয়ে বলি আমাদেরকে জ্ঞান দান করবেননা, বা—-জানেনা পাটের খবর আর আপনারা হয়েছেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যসাগর।
মুনা আপনি রুপ সাগরে ডুব দিন, তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই, আপনার রুপ ঝলমল করুক সেটা আমার কামনা, সেদিন কে একজন বললো আপনি নাকি যখন প্রেস মিনিস্টার হিসেবে লন্ডনে ছিলেন তখন নাকি অনেক সুন্দরী ছিলেন এখন নাকি কি একটা পরিবর্তন হয়েছে আপনার, আমি বলেছি জানিনা, আমার সাথে তো দেখা হয়নি বলতে পারবোনা——-। সেটা আপনার ব্যাক্তিগত ব্যপার, শুনেছি বয়স বাড়লে মহিলা বলেন আর পুরুষ বলেন সবাই নাকি সৌন্দেয্যের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে, সবাই রুপ সাগরে ডুব দিতে চায়, তবে আমরা ডুব দিতে চাই অরুপ রতনের জন্য। সেই রতনটা হচ্ছে আমাদের বিনা বাধায় ভোটাধিকার। প্লিজ ঐ দ্বৈতনাগরিকত্ব সার্টিফিকেটের ঝামেলায় আমাদেরকে না ফেলে সহজ এবং সাবলীলভাবে ভোটার লিস্টে আমাদের প্রবাসীদের নামটা করে দিন এই প্রত্যাশা। আপনি অনেক ভালো থাকুন মুনা, আপনি আরো বড় হোন সুন্দর হোন, শুভ কামানা নিরন্তর আপনার জন্য।
শেষ কথা আমার চ্যানেল আই ইউরোপ যে আপনার সরকার বন্ধ করেছে এর জন্য কিছুই করতে হবেনা। টেলিভিশনটি যখন আপনার সরকার ঢাকা চ্যানেল আইকে দিয়ে বন্ধ করে তখন আমার খারাপ লেগেছিল, কারন চ্যানেল আই ইউরোপকে আমি তিলে তিলে গড়ে তুলার চেষ্টা করেছিলাম আমার সন্তানের মত, ঢাকা চ্যানেল আইয়ের সাগর ভাই, শাইখ সিরাজ ভাই, মুকিত মজুমদার বাবু ভাই, মামুন ভাইরা যদি বাবা হন তাহলে আমি ছিলাম চ্যানেল আই ইউরোপের বড় চাচা। চ্যানেলটি সব মিলিয়ে ১১ বছর আমি চালিয়েছিলাম, এখানে আমার জীবনের সব টাকা পয়সা ইনভেস্ট করেছিলাম, বন্ধ হওয়ার পর আমার লস হয়েছে সর্বমোট ১.২ মিলিয়ন পাউন্ড। অবশ্য এটা কেসিনো ব্যবসায়ি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী অথবা পাপিয়া অথবা আওয়ামীলীগের কোনো ঘুষখোর দুর্নীতিবাজের জন্য কিছুই না, কিছুই না একটা ওয়ার্ড কমিশনারের জন্য, যার বাসায় ২৬ কোটি টাকা পাওয়া গিয়েছিল! কিন্তু আমার জন্য তো অনেক কিছু মুনা। আমি তো সারাজীবন সৎ পথে চলেছি, সৎ উপায়ে জীবন পরিচালিত করেছি। অনেকে বলেন সরকারের সাথে হাত মিলয়ে চললে তো এ অবস্থার সৃষ্টি হতো-না। আমি বলি সত্যের মত বদমাশ আর মিথ্যার মত সুলভ এ পৃথিবীতেই আমার জন্ম আমি জীবনে অন্যায়ের সাথে আপোষ করিনি করবোও-না। তবে আপনার সরকার যা করছে অন্যায় করছে, সেটির প্রতিদান অবশ্যই পাবে। বিএনপি যখন অন্যায় করেছিল তখন ওয়ান ইলেভেন অপরিহার্য হয়ে উঠেছিল, আওয়ামীলীগ যা করছে ডাবল ওয়ান ইলেভেন অপেক্ষা করছে আপনার সরকারকে একটু বলে দিবেন প্লিজ।
লেখক সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেটমেন্ট ডট কম
সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ
সাবেক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
লন্ডন, শনিবার, ১৪ মার্চ ২০২০
ইমেইল rafcbanglastatement@yahoo.com